নতুন নির্মিত চার লেনের সড়কের বেহাল দশায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘এই ফোর লেন করে লাভ কী? ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দুই বছর পরপর সংস্কার করতে হচ্ছে। এ জন্য আবার আলাদা প্রকল্প নিতে হচ্ছে। নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক এক বছর না যেতেই ছেঁড়া কাঁথার মতো জোড়াতালি অবস্থা! যা দেখছি তাই বলছি। কোয়ালিটিতে (গুণমান) নজর দিতে হবে। রাস্তাগুলো রক্ষা করতে হবে।’
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের চুক্তি সই অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের সমালোচনা করে এ সময় তিনি বলেন, এত আয়োজনের কী দরকার।
২০০৪ সালে দুই লেনের ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক নির্মিত হয়। একে ভুল আখ্যা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, তখনই এই মহাসড়ক চার লেন করা উচিত ছিল। চলমান প্রকল্পের কাজ সময়মতো শেষ করবেন। গুণগত মান যেন বজায় থাকে। নতুন রাস্তার দরকার নেই। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে স্মার্ট রাস্তা করতে হবে।
১৬ হাজার ৯১৮ কোটি টাকায় ঢাকা থেকে সিলেট পর্যন্ত ২০৯ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। ধীরগতির গাড়ি চলাচলে মহাসড়কের দুই পাশে থাকবে সাড়ে পাঁচ মিটার প্রশস্ত সার্ভিস লেন। ছয়টি প্যাকেজে প্রকল্পের কাজ চলছে। আজ তৃতীয় প্যাকেজের দুটি লটের চুক্তি হয়েছে। ২ হাজার ৩১৮ কোটি টাকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরাইল থেকে হবিগঞ্জের এস এম স্পিনিং মিল পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হবে।
অতিরিক্ত পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে মহাসড়ক টেকসই হচ্ছে না। এসব গাড়ি নিয়ন্ত্রণে ২৮টি মহাসড়কে এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন স্থাপনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপদ (সওজ)। এর ধীরগতিতে হতাশা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের সংস্থাটির প্রধান প্রকৌশলী মো. ইসহাকের উদ্দেশে বলেন, এটা কবে হবে কেউ জানে না।
ঢাকা-সিলেটের পঞ্চম লটের কাজ পেয়েছে হেগো-মীর আখতার জয়েন্টভেঞ্চার। ১ হাজার ২৩২ কোটি টাকায় ১৫ দশমিক ৭ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা ছাড়াও ১১টি ছোট-বড় সেতু, ৬৯০ মিটার দীর্ঘ ওভারপাস এবং দুটি ফুট ওভারপাস নির্মাণ করা হবে। ষষ্ঠ লটে ১ হাজার ৫৮ কোটি টাকায় প্রায় ১৯ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএইচএসআইইটিসি-এসএলজিসি-পিডিএল জয়েন্টভেঞ্চার।
সড়ক পরিবহন সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীর সভাপতিত্বে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রওশন আরা মান্নান, আবু জাহির এমপি, ছলিম উদ্দীন তরফদার এমপি, রাবেয়া আলীম এমপি, মেরিনা জাহান এমপি, প্রকল্প পরিচালক এ কে মোহাম্মদ ফজলুল করিম, ঋণদাতা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন জিনটিং, মীর আখতার লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক মীর নাসির হোসেন, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।