হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাকে পুনরুদ্ধার করতে ও যুবসমাজকে মাদত থেকে দুরে রাখতে এবং ইংরেজি নতুন বছরকে উদযাপন করতে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো ঘোড় দৌড় প্রতিযোগিতা। বিলুপ্ত প্রায় এমন খেলা দেখতে পেরে দারুন খুশি দর্শকরা প্রতিবছর এমন আয়োজেনর দাবী তাদের। এদিকে করোনার এমন উদ্ধমুখি অবস্থার মধ্যে খেলা দেখতে আসা দর্শনার্থী আয়োজকসহ কাউকেই মাস্ক পড়তে দেখা যায়নি।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নবাবগঞ্জ উপজেলার ৪নং শালখুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের আয়োজনে উপজেলার পচাকরঞ্চী মাঠে এই ঘোড় দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এদিকে গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খেলাকে ঘিরে গ্রামে তৈরি হয়েছে উৎসবের আমেজ। খেলা দেখতে দুর দুরান্ত থেকে দর্শকরা উপস্থিত হন মাঠে ছেলেদের থেকে মেয়ে দর্শক ছিলো অনেক বেশি। জয়পুরহাট, গাইবান্ধা, রংপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকার প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন। ৩টি গ্রুপে মোট ২৩টি ঘোড়া অংশগ্রহণ করে।এছাড়া ছিল বাবা ও মেয়ের প্রতিযোগিতা। এতে দিনাজপুরের বাহাদুর ঘোড়া বিজয়ী হন।খেলা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার হিসেবে খাসি বিতরণ করা হয়।
খেলা দেখতে আসা বৃদ্ধ হযরত আলী বলেন, আগে আমাদের এসব অঞ্চলে ঘোড়া খেলা প্রচুর হতো আমরা আনন্দ উপভোগ করতাম। কিন্তু এখন আমাদের এই এলাকা কেন আশেপাশের এলাকাতেও এই খেলা তেমন একটা দেখা যায়না। নতুন করে আবারো এই অঞ্চলে ঘোড়াখেলার আয়োজন করার কথা শুনে খেলা দেখতে এসেছি খেলা দেখতে পেয়ে খুব ভালো লাগলো।
খেলা দেখতে আসা গৃহবধু নাজমা বেগম বলেন, শুধু এই ঘোড়া খেলা দেখার উদ্দেশ্যেই স্বামীর বাড়ি থেকে আমার বাবার বাড়িতে আসা। শুধু আমিনা এই খেলা দেখার জন্য আমার সাথে শ্বশুর বাড়ির আরো অনেকে এসেছে।এখানে খুব সুন্দর ঘোড়া খেলা হচ্ছে যা দেখতে পেয়ে খুব খুশি লাগছে। এমন ঘোড়া খেলা আগে কখনো আমি দেখিন এই খেলা যেন প্রতিবছর হয় সেই দাবী জানাচ্ছি আয়োজকদের নিকট। খেলা দেখতে আসা শিশু শিউলি আকতার বলেন, আমি আমার আম্মুর সাথে ঘোড়া খেলা দেখতে এসেছি। অনেকগুলো ঘোড়া আর ঘোড়া খেলা দেখে আমাকে খুব ভালো লেগেছে।
খেলায় অংশগ্রহনকারী আব্বাস উদ্দিন বলেন, আমি রংপুরের পীরগঞ্জ থেকে ঘোড়া নিয়ে এই প্রতিযোগীতায় খেলা দেখাতে এসেছি। আমি বিগত ৩৫বছর ধরে এই ঘোড়া খেলা দেখিয়ে আসছি, আশেপাশের জেলাগুলোতে যে প্রতিযোগীতা হয় তাতে আমি অংশগ্রহন করি। এই খেলা একটা আমাদের একটা শখ মানুষকে আনন্দ দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এই খেলা দেখিয়ে আসছি। মাঝে মধ্যে পুরস্কারো পাই তাতে নিজেকে খুব আনন্দিত মনে করি।
ঘোড় দৌড় খেলার আয়োজক মমিনুল হক বলেন, গ্রাম বাংলার একটিঐতিহ্যবাহী ও পুরানো খেলা হলো ঘোড়দৌড়। এদানিং এই খেলাটি তেমন দেখা যায়না তাই হারিয়ে যাওয়া সেই খেলাকে পুনরুদ্ধার করতে।যুবসমাজ যেন মাদকের দিকে ধাবিত না হয় তাই খেলাধুলার মাধ্যমে যুবসমাজকে মাদকের থাবা থেকে দুরে রাখতে আমাদের এই খেলার আয়োজন। সহযোগীতা পেলে সামনের দিনে আরো বড় পরিসরে এমন খেলা আয়োজনের আশা।
আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ24।।