কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের মৌকারা দারুচ্ছুন্নাত নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে অপ্রচার ও ঢালুয়া বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে প্রবীণ শিক্ষক দিদারুল আলমের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টম্বর) পৃথকভাবে শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রাঙ্গনে এ মানববন্ধন কর্মসুচীর আয়োজন করা হয়।
মানবন্ধনে মোৗকারা মাদ্রাসার আলিম ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, মালয়েশিয়া প্রবাসী ইছহাকসহ কতিপয় শিক্ষার্থীরা মৌকারা মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মো: আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার ও মাদ্রাসার সম্পদ লুটপাট করতে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। যারা অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে, তাদেরকে ভুল স্বীকার করে প্রকাশ্যে এসে ক্ষমা চাইতে হবে। শিক্ষার মান
নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলেছেন, তাদেরকে সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনতে হবে।
সংবাদ সম্মেলন করে যারা মাদ্রাসার সুনাম নষ্ট করেছে তাদের আবার সাংবাদিক সম্মেলন করে ক্ষমা চাইতে হবে। যদি দাবী আদায় না হয় তাহলে অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইম (অপরাধ) মামলা করা হবে।
এরআগে ওই মাদ্রাসার হল রুমে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্যে রাখেন সুপার মাওলানা মো: আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, বিভিন্নভাবে তাকে জড়িয়ে কামিল মাদ্রাসার সাবেক ও বর্তমান কথিপয় শিক্ষার্থীরা মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। এসময় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম বলেন, ছাত্ররা যেসব বিষয়ে আন্দোলন ও উপজেলা প্রশাসনের
নিকট স্মারকলিপি দিয়েছেন, তার মধ্যে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগটি মিথ্যা ও বানোয়াট। তবে কিছু দাবী যৌক্তিক। এসব বিষয়ে মাদ্ধসঢ়;্রাসা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়নি।
উল্লেখ্য, ২৫ সেপ্টেম্বর বুধবার মৌকরা দারুসসুন্নাত নেছারিয়া কামিল মাদরাসা, দ্বীনিয়া, হেফজখানা ও মহিলা মাদরাসার শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বৈষম্য, অনিয়ম, নির্যাতনের অভিযোগ এনে সুপার মাওলানা মো: আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে সম্মেলন মানববন্ধন বিক্ষোভ মিছিল করে। এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুরাইয়া আক্তার লাকীর নিকট ১৯ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি দেন।
এদিকে, উপজেলার ঢালুয়া বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে প্রবীণ ইংরেজি শিক্ষক দিদারুল আলমের উপর হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দুপুরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করে। এসময় হোমনাবাদ আদর্শ ডিগ্রী কলেজসহ আশেপাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মানববন্ধনে এসে জড়ো হন। মানববন্ধনে শিক্ষক দিদারুল আলমের উপর হামলার নেতৃত্বে থাকা বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য আবুবকর সিদ্দিক মিয়া ও পেয়ার আলমসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানান। পরে বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুরাইয়া আক্তার লাকীর কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে মৌখিকভাবে হামলায় জড়িতদের বিচারের দাবি জানান শিক্ষক ও শিক্ষর্থীরা। উল্লেখ্য, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শ্রেণী কক্ষে প্রবেশ করে অভিযুক্তরা শিক্ষক দিদারুল আলমকে মারধর করে আহত করে।
মানববন্ধন, স্মারকলিপি ও অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সুরাইয়া আক্তার লাকী বলেন, আমি সবগুলো বিষয়ে অবহিত হয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।