নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে (১০ ডিসেম্বর) নড়াইল মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে ছিলো জাতীয় ও মুক্তিযোদ্ধা পতাকা উত্তোলন, মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ, বদ্ধভূমি, গণকবর, বঙ্গবন্ধুর মুর্যাল ও প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বিশেষ মোনাজাত, আলোচনা সভা, মুক্তিযুদ্ধের মহড়া, জারী গান, এনভায়নমেন্ট থিয়েটার এবং স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান।
শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় দিবসটি পালন উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আয়োজনে শহরের রূপগঞ্জ পানি উন্নয়নবোর্ড চত্বরে গণকবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়। পরে রূপগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, পুরাতন টার্মিনাল চত্বরে বঙ্গবন্ধুর মুর্যাল, জজকোর্ট সংলগ্ন বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ, জেলা শিল্পকলা একাডেমী চত্বরে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন নড়াইল জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, নড়াইল প্রেসক্লাব, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, চিত্রা থিয়েটারসহ সরকারি-বে-সরকারি দপ্তর, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
মুক্ত দিবস উপলক্ষে রূপগঞ্জ থেকে একটি র্যালি বের হয়। র্যালিটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমী চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসব অনুষ্ঠানে নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ ফকরুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ কামরুজ্জামান, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) কৃষ্ণা রায়, নড়াইল পৌরসভার কাউন্সিলর মোঃ রেজাউল বিশ্বাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুর রহমান হিলু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, আইনজীবি, সাংস্কৃতিক কর্মিসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া চিত্রা থিয়েটারের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের মহড়া ও এনভায়নমেন্ট থিয়েটারের আয়োজন করা হয়।
উল্লেখ্য যে, ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে নড়াইলকে শত্রুমুক্ত করেন বাংলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা। হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের নানা ঘটনার পর নড়াইলকে হানাদারমুক্ত করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন মুক্তিযোদ্ধারা। সে মোতাবেক মুক্তিযোদ্ধারা ০৯ ডিসেম্বর তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলেন নড়াইল শহরকে। ১০ ডিসেম্বর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাক ক্যাম্পের ওপর হামলা চালালে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে তুমূল সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় বাগডাঙ্গা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর ও মতিয়ার রহমান শহীদ হন। পরে মুক্তিবাহিনীর হাতে পাক ক্যাম্পের দুই সেন্ট্রি নিহত হলে বেলা ১১ টার দিকে ক্যাম্প অধিনায়ক বেলুচ কালা খান বিপুল অস্ত্রসহ সারেন্ডার করেন। তখন জয় বাংলা শ্লোগানে প্রকম্পিত হয় নড়াইল শহর।
প্রধান সম্পাদক: হুমায়ুন কবির রনি
মোবাইল: ০১৭১৬-৫৩০৫১৪
ইমেইল: onnews24@gmail.com
www.onnews24.com