ময়লা আবর্জনার স্তুপ আর অবৈধ দখলদারদের কারণে সাধারণ কৃষক তার উৎপাদিত ফসল হাটে বিক্রয় করতে পারছে না, নাম মাত্র মূল্যে পাইকারের কাছে বিক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছেন। কৃষক তার উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ তুলেছে।
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়ন এ বড়ভিটা হাট ও বাজার টিতে সাধারণ কৃষকের জন্য “ত” বাজার নেই, নেই “টেরি ফেরি” বাজার। ফলে চরম সংকটের মধ্যে পড়তে হয় উৎপাদিত ফসল সবজি নিয়ে কৃষকদের। ওই এলাকার কৃষক মশিয়ার রহমান বলেন, আমি ৮ থেকে ১০ বিঘা জমিতে প্রতি বছর বিভিন্ন ধরনের সবজি আবাদ করে আসছি। আগে এই বাজারটিতে এসে বিক্রি করতে পারলেও বর্তমানে আমাদের বিক্রির জায়গাগুলোতে অবৈধ স্থাপনা উঠিয়ে আমাদের জায়গা বন্ধ হয়ে গেছে, গ্রাম থেকে ভ্যানে করে ফসল নিয়ে এসে দাঁড়ানোর জায়গা নাই আর মাল বিক্রি করবো কোথায়?
কৃষক হরিদাস রায় আক্ষেপ করে বলেন, এখানকার কিছু স্থানীয় দোকানদার মোটা অঙ্কের টাকা-পয়সা দিয়ে আমাদের জায়গায় কিনে স্থায়ী দোকান ঘর নির্মাণ করছে। কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, কৃষকের মাল সস্তায় কিনিবার জন্য পাইকারের ঘর পাইসা দিয়া সবগুলা পজিশন ওমরায় কিনি নিয়া গোডাউন বানাইছে, হামার তো মাল বেচের জায়গা নাই, উচিত মূল্য পামো কোনঠে, বাধ্য হয়ায় পাইকারককে মাল গছে দিবার লাগেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বড়ভিটা হাট-বাজার টিতে ড্রেনেজ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে, নেই পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা, একটি পুরাতন ভাঙ্গা অপরিচ্ছন্ন নোংরা লেট্রিনের উপরেই মুড়ি মুড়কির দোকান। বর্জ্য ফেলার ডাস্টবিন না থাকায় কসাইখানার আশপাশ বিভিন্ন জমানো বর্জ্য দুর্গন্ধের সৃষ্টি করেছে, ফলে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছেন অত্র এলাকার ব্যবসায়ীরা।
হাট ইজারাদার আ.ন.ম মনজুরুল হক জানান, তিন বছর এই হাটটির কোন ইজারাদার ছিলনা ইউনিয়ন ভূমি অফিস দেখা শোনা করত। এ বছর বৈশাখ মাস থেকে হাট আমরা ইজারা পেয়েছি। হাটে এসে দেখি, আমাদের কোন ঢোকার রাস্তা নাই। অবৈধ স্থাপনায় প্রায় শতাধিক দোকান তৈরি হয়েছে। তারা ঠিক ভাবে টোল দিচ্ছে না। ড্রেন ও টয়লেট এর উপর নির্মাণ হয়েছে দোকান ঘর। হাটের বর্জ্য মাসে ২/৩ দিন পরিস্কার করা হয়। এই হাট বাজারকে রক্ষা করার জন্য প্রশাসনের দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
এ বিষয়ে বড়ভিটা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম বলেন, হাটের অবৈধ স্থাপনা সহ নানা বিষয়ে আমি ভূমি কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি, অনেক আগেই হাটটির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হওয়ার কথা ছিল কিন্তু স্থানীয় চেয়ারম্যান ফজলার রহমান সাহেবের অনুরোধে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ সম্ভব হয়নি। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হলে ওনার ভোটের ক্ষতি হবে এ কারণে তিনি ব্যবসায়ীদের নিয়ে আপাতত অবৈধ স্থাপনা বন্ধের অনুরোধ জানান, তারপর থেকে বন্ধ হয়ে গেছে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহি অফিসার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী মুঠো ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি ।
প্রধান সম্পাদক: হুমায়ুন কবির রনি
মোবাইল: ০১৭১৬-৫৩০৫১৪
ইমেইল: onnews24@gmail.com
www.onnews24.com