নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) যোগদান করেছেন উপাচার্য হিসেবে সদ্য নিয়োগ পাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ম উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেন।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে তিনি যোগদান করেন। নোবিপ্রবি বিএনসিসি উপাচার্যকে গার্ড অফ অনারের মাধ্যমে বরণ করে নেয়।
এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় শেষে নোবিপ্রবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সাথে দেখা করেন। উপাচার্যকে শুভেচ্ছা জানাতে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়ার সংস্কৃতি থাকলেও এবার ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। কোনো পক্ষই উপাচার্যকে ফুল দিয়ে বরণ করে নিতে দেখা যায় নি।
ছাত্রনেতাদের সাথে মতবিনিময় সভায় উপাচার্য বলেন, আমাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগের কথা ছিল। কিন্তু নিয়োগের আগ মুহূর্তে শিক্ষা উপদেষ্টা আমাকে বলেন, ইসমাইল তুমি বিজ্ঞানের লোক, ঝামেলার ভেতর না থেকে বরং তুমি বিজ্ঞান-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করো। তখন আমাকে বলা হলো নোয়াখালীতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য।
এ সময় উপাচার্য বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর আমার কাজ হলো এই বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষা ও গবেষণায় এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তবে সেক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি এবং দুর্নীতিতে আমাদের নীতি হবে জিরো টলারেন্স। এখানে আমি উপাচার্য হিসেবে কোনো অন্যায় করলে আমাকে তোমরা বলবা স্যার এখানে আপনার অন্যায় হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে হলে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।
শিক্ষা ও গবেষণায় বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে উপাচার্য বলেন, গবেষণায় নোবিপ্রবিকে সেন্টার অফ এক্সিলেন্সে নিয়ে যাবো। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যে ফসল তা কাজে লাগিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা সবাই মিলে একসাথে এগিয়ে নিয়ে যাবো। এছাড়াও সেশনজট দূরীকরণে উপাচার্য গুরুত্ব দিবেন বলে আশাব্যাক্ত করেন।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ, ফিশারিজ এন্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ জাহাঙ্গীর সরকার, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন, প্রক্টর এএফএম আরিফুর রহমান, রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) তামজিদ হোছাইন চৌধুরীসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, ইনস্টিটিউটের পরিচালকবৃন্দ, বিভাগের চেয়ারম্যানবৃন্দ, হলের প্রভোস্টবৃন্দ, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা থেকে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইলকে নোবিপ্রবি উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল ১৯৯৪ সালে চট্টগ্রামের কালাউজান ড. ওয়াই.বি.আর.এস হাই স্কুল থেকে এসএসসি ও ১৯৯৬ সালে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি ও কেমিক্যাল টেকনোলজি বিষয়ে বিএসসি ও এমএসসি সম্পন্ন করে যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৬ সালে পিএইচডি এবং পরবর্তীতে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্ট ডক্টরাল ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ২০০৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ২০২৩ সাল থেকে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক।
সূত্রঃ বিডি24লাইভ
একে/অননিউজ24