নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার নোয়াগ্রাম ইউয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য তায়জুল ইসলামকে (৪৬) কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারী) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। তায়জুল ব্রাহ্মণডাঙ্গা গ্রামের আবু আবুল হোসেন মোল্যার ছেলে।
আহতের ভাগ্নে একই গ্রামের এনামুল মোল্যা জানান, শনিবার সকালে তায়জুল বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে ব্রাহ্মণডাঙ্গা পুরনো খালের মাথায় মাছের ঘের দেখতে যান। সেখান থেকে ফেরার সময় প্রতিপক্ষ গ্রæপের মাতুব্বর সাবেক চেয়ার্যমান নুরুন্নবী, বর্তমান ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বর হুমায়ুন মোল্যা, মাতুব্বর নাজির মোল্যা ও জনি মোল্যার নেতৃত্বে তাদের ১৪/১৫ জন লোক পরিকল্পিতভাবে রামদা, ছ্যানদা, চাইনিজ কুড়াল, হাতুড়ীসহ ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঘিরে ফেলে এবং বেপরোয়ভাবে কোপাতে থাকে। তায়জুল ইসলামের মাথায়, পায়ে, মাজা সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে। খবর পেয়ে আমরা দ্রæত এগিয়ে গেলে প্রতিপক্ষরা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে তাকে দ্রæত নড়াইল সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন চিকিৎসক। তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য তায়জুলকে খুলনার একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তায়জুলের চাচাতো ভাই খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমাদের মেম্বর প্রার্থী হেরে যাবার পর আমাদের পক্ষীয় লোকজনকে মারধর করা হয়েছে। জীবন নাশের হুমকী দেয়া হচ্ছে। জীবননাশের ভয়ে অনেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছে।’
এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন ধরে ব্রাহ্মণডাঙ্গা, চরব্রাহ্মণডাঙ্গা, হান্দলা ও বাড়ীভাঙ্গা গ্রাম্য দলাদলির বিরাজ করছে। পুরো ইউনিয়ন জুড়ে দলাদলির একটি গ্রæপের নেতৃত্ব দেন নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফয়জুল হক রোম ও অন্য গ্রুপের নেতৃত্বে দেন সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ ফয়জুল আমির লিটু। আহত তায়জুল ইসলাম লিটু গ্রæপের লোক। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আহত তায়জুল ইসলামের পক্ষের প্রার্থী আশরাফ মোল্যা পরাজিত হয়। এই ওয়ার্ডে জয়লাভ করেন ফয়জুল হক রোম গ্রæমের প্রার্থী হুমায়ুন মোল্যা। এরপর থেকে তায়জুল ইসলাম সহ তার গ্রুপের লোকজন জীবন নাশের আশংকায় গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। সম্প্রতি এলাকার পরিবেশ কিছুটা শান্ত হলে বাড়িতে ফিরে যায়। শনিবার সকালে পাশ^বর্তী কানাবিল এলাকায় নিজের মাছের ঘের দেখতে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে ঘিরে ফেলে হত্যার চেষ্টা চালায়।
সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, ‘ তায়জুল ইসলামের শরীরের জখম গুরুতর হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু হেনা মিলন বলেন, ‘ এলাকায় সামাজিক দলাদলির জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর থেকে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের আটকের জোর চেষ্টা চলছে। ’
প্রধান সম্পাদক: হুমায়ুন কবির রনি
মোবাইল: ০১৭১৬-৫৩০৫১৪
ইমেইল: onnews24@gmail.com
www.onnews24.com