নড়াইলে জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের সময় হামলায় আহত ৫

নড়াইল প্রতিনিধি

নড়াইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের সময় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামীলীগ নেতা সৈয়দ ফয়জুল আমির লিটুর সমর্থকদের ওপর এবং সদস্য প্রার্থী ওবায়দুর রহমানের ওপর হামলা করা হয়েছে। এসময় ঠেকাতে গিয়ে একজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

সোমবার বেলা ১১টার দিকে নড়াইল জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় উপস্থিত জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস সহ দলীয় নেতৃবৃন্দ নিরব ভূমিকা পালন করেন।

জানাগেছে, সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে নড়াইল জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ শুরু হয়। প্রথমে সংরক্ষিত মহিলা ও পরে পুরুষ ওয়ার্ডের প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ শুরু হয়। মহিলাদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ শেষে পুরুষ ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী খোকন কুমার সাহা ও ওবায়দুর রহমান তালা প্রতীক চাওয়ায় নির্বাচনী বিধান অনুযায়ী লটারীর সিদ্ধান্ত হয়। এসময় প্রার্থী খোকন কুমার সাহা কোন কারন ছাড়াই উত্তেজিত সকল কর্মকর্তা ও নেতৃবৃন্দের সামনে গালিগালাজ করে মুখে ঘুষি মারে। এসময় ওবায়দুর রহমানও পাল্টা ঘুষি মারে।

একই সময় জেলা প্রশাসকের হলরুমের পুর্বপাশে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটুর প্রস্তাবকারী বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কাশিপুর ইউনিয়নের সদস্য মোঃ শরিফুল ইসলাম ও সমর্থনকারী নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য সৈয়দ নওয়াব আলীর ওপর হঠাৎ করে হামলা চালায় আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী সুবাস চন্দ্র বোসের সমর্থকরা।

এ বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটু বলেন,আমার অনুপস্থিতিতে আমার প্রতীক আনতে যান আমার প্রস্তাবকারী,সমর্থনকারী সহ আমার পক্ষের লোকজন। জেলার সর্বচ্চ নিরাপত্তাস্থল জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আমার লোকজনকে মারপিট করা হয়েছে। এতে আমার প্রস্তাবকারী নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের সদস্য সৈয়দ নওয়াব আলী, কাশিপুর ইউনিয়নের সদস্য মোঃ শরিফুল ইসলাম, নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জাহিদুল কালু, শামুকখোলা গ্রামের কামাল কাজী, লাবু কাজী, জাকির কাজী আহত হয়েছেন। আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সামনে এধরনের আচরণ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয়েছে। আমি এ ঘটনার উপযুক্ত বিচার চাই। পাশাপাশি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার পরিবেশ চাই।’

এ বিষয়ে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস বলেন, ‘আমি আনারস প্রতীক চেয়েছি। ওদিকে সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটু আনারস প্রতীক চেয়েছে। এসময় আমার লোকজনের সাথে সামান্য হাতাহাতি ধাক্কাধাক্কি হয়েছে।’

নড়াইল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মোঃ জসিম উদ্দিন হামলা মারামারি ও ভাংচুরের ঘটনা স্বীকার করে বলেন, ‘জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান স্যারের নির্দেশে কিছুু সময়ে প্রতীক বরাদ্দের কাজ বন্ধ রাখি। পরে আপোষ হলে কার্য্যক্রম সমাপ্তি করি।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বলেন প্রাথমিক ভাবে কাউন্সিলর প্রার্থী ওবায়দুর রহমান ও খোকন কুমার সাহা কে শোকজ করা হবে এবং নির্বাচন কমিশনে জানানো হবে। স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটুর লোকজনের উপর হামলা ও হলরুমের চেয়ার ভাংচুরের বিষয়ে বলেন, প্রার্থী যদি লিখিত অভিযোগ করেন, তাহলে আমরা বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।’

এদিকে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস প্রতীক পেয়েছেন আনারস। স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল আমির লিটু পেয়েছেন মোটর সাইকেল এবং অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী সুলতান মাহমুদ বিপ্লব চশমা প্রতীক পেয়েছেন।

আরো দেখুনঃ