লালন সাধক হারেজ ফকীরসহ কয়েকজনকে মারধর ও বাদ্যযন্ত্র ভেঙ্গে ফেলার প্রতিবানে নড়াইলে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট নড়াইলের আয়োজনে নড়াইল প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট নড়াইলের সভাপতি মলয় কুন্ডুর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন নড়াইল পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা, জোটের সহ-সভাপতি মাহবুব-ই-রসুল অরুণ, সাধারন সম্পাদক শরফুল আলম লিটু, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহবুবুর রহমান লিটু, শামীমূল ইসলাম টুলু, মূর্ছনা সংগীত নিকেতনের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক প্রভাষক প্রশান্ত সরকার, চিত্রা থিয়েটারের সাধারন সম্পাদক ইমান আলী মিলন, চিত্রা থিয়েটারের মুন্সি আসাদুর রহমান, নাজমুল হাসান লিজা, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মজিব সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন শীতল প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ‘মৌলবাদীরা বার বার বিভিন্নভাবে বাঙ্গালি সংস্কৃতির ওপর আঘাত হানছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। অবিলম্বে এই মৌলবাদীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
জানাগেছে, জেলার কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়নের নওয়াগ্রামের বাসিন্দা হারেজ ফকীর তার ভক্তদের নিয়ে নিজ বাড়ির বাউল আশ্রমে গত ২৭ আগস্ট রাতে গানবাজনা করার সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান মনি মিয়ার বড়ো ভাই আলী মিয়ার নেতৃত্বে ২০-২৫জনের একটি দল বাড়িতে প্রবেশ করে তাকে মারধর, হারমোনিয়াম,তবলা, দোতারা, ঢোল, একতারা, বাঁশিসহ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র ও বাড়ির মালালাল ভাংচুর করে।
এ ঘটনায় হারেজ ফকীর গত বুধবার কালিয়া থানায় ওই ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই আলী মিয়া শেখ, একই গ্রামের মিন্টু শেখসহ অজ্ঞাত ২০-২৫জনের বিরুদ্ধে একটি জিডি করেন। জিডি করার ঘটনায় অভিযুক্তরা হারেজ ফকীরের প্রতিবেশী স্থানীয় ইসমাইল চৌকিদারসহ ৪জন নারী-পুরুষকে মারধর করে।
সাধক ফকিরের ছেলে মিজান ফকীর বলেন, আসামিরা এখন মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছে। এক প্রশ্নে তিনি তার বাবা বা পরিবারের কেউ গাঁজা সেবন বা ব্যবসার সাথে জড়িত নন বলে দাবি করেন।
এদিকে অভিযুক্ত আলী মিয়া শেখ বলেন, হারেজ গাঁজা সেবন ও ব্যবসা করে এলাকার যুব সমাজকে ধ্বংস করছে। এসব করতে তাকে নিষেধ করা হয়েছে। স্থানীয় কিছু ছেলে হারেছের বাড়িতে যেতে পারে। কিন্তু তারা কি করেছে তা জানেন না। এ ঘটনার সাথে তিনি জড়িত নন।
এ প্রসঙ্গে কালিয়া থানার ওসি শেখ তাসমীম আলম বলেন, ‘লিখিত অভিযোগের পর আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত। তবে দু’পেক্ষর মধ্যে বিষয়টির মিমাংসার চেষ্টা চলছে।’