নড়াইলে হাতুড়িপেটায় আহত কিশোরের মৃত্যু
নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইলে প্রতিপক্ষের হাতুড়ী পেটার ৩দিন পর গুরুতর আহত কিশোর জুয়েল ভূঁইয়া (১৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। শনিবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টার দিকে শনিবার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। জুয়েল নড়াইল সদর উপজেলার বাঁশগ্রাম ইউনিয়নের কর্মচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক পান্নু ভূঁইয়ার ছেলে।
জুয়েলের চাচাতো ভাই আল আমিন জানান, কর্মচন্দ্রপুর গ্রামে সিকদার ও ভূঁইয়া বংশের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্ব›দ্ব চলে আসছিল। জুয়েল বাড়ির পাশর্^বর্তী মাদ্রাসা বাজারে এক সবজির দোকানের কর্মচারি হিসেবে কাজ করতো।
গত ৯ আগস্ট সকাল ৯টার দিকে ভ্যানযোগে নাকসী হাটে যাচ্ছিলো। পথিমধ্যে বেতভিটা নামক স্থানে পৌছালে প্রতিপক্ষ কর্মচন্দ্রপুর গ্রামের ইয়াসিন, ফিরোজ সহ অন্তত ৬জন তাকে হাতুড়ি দিয়ে মাথায়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। প্রথমে তাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তিনদিন ধরে চিকিৎসকালেও তার জ্ঞান ফেরেনি। শনিবার সন্ধ্যায় তার মুত্যু হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, নিহত জুয়েলের পিতা পান্নু ভুইয়া একজন গরীব কৃষক। জুয়েল পাশ^বর্তী নাকসী-মাদ্রাসা বাজারে একটি সবজির দোকানে কাজ করতো। হাটের দিনে সেখানে সবজি বিক্রি ও হিসান-নিকাশ রাখতো। পারিশ্রমিক হিসেবে যে টাকা পেতো তা দিয়ে পড়াশোনা এবং তার পিতাকে সংসারের খরচ বাবদ কিছুটা সহযোগিতা করতো। জুয়েল বেতভিটা বিবিএস দাখিল মাদ্রাসায় ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। প্রায় দুই বছর হলো আর্থিক অনটনের কারনে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে।
এদিকে জুয়েলের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আসামী পক্ষের অন্তত ৮টি পরিবারের বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করেছে নিহত জুয়েলের স্বজনরা। বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটকালে পুলিশ অন্তত ১০জনকে আটক করেছে।
নড়াইল সদর থানার ওসি (চলতি দায়িত্বে) মোঃ মাহমুদুর রহমান জানান, জুয়েলের ওপর হামলার ঘটনায়তার চাচা মান্নান ভূঁইয়া বাদি হয়ে ৬জনকে আসামি করে নড়াইল সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলাটি এখন আদালতে আবেদন করলে হত্যা মামলায় রূপান্তর হবে। হামলার ঘটনার সাথে জড়িত আতিয়ার সিকদার নামে একজনকে ঘটনার পর গ্রেফতার করা হয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।