পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় চায়ের সবুজ পাতার ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত, চা পাতার দাম কর্তন ও চা চাষীদের হয়রানি বন্ধ সহ ৮ দফা দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারক লিপি প্রদান করেছে চা চাষীরা।
রবিবার দুপুরে পঞ্চগড়ের ক্ষুদ্র চা চাষী গণের ব্যানারে উপজেলার বিজয় চত্বর এলাকায় ডোমার সড়কের একপাশে দাড়িয়ে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন পালন করা হয়। এসময় দেবীগঞ্জ ডোমার সড়কে কাঁচা চা পাতা ফেলে প্রতিবাদ জানান চাষিরা।
মানববন্ধনে চা চাষী আবুল বাশার বসুনিয়া, আনোয়ার হোসেন বসুনিয়া, শাহিন আলম, আব্দুল লতিফ লিখন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এতে দেবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শতাধিক চা চাষী অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ইংরেজরা যেমন নীল চাষে এদেশের চাষীদের রক্ত চুষে ছিল। তেমনি পঞ্চগড়ের চা-কারখানা মালিকসহ সিন্ডিকেট চক্রটি চা চাষীদের রক্ত চুষে খাচ্ছে। চাষীদের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। চা পাতার দাম কর্তন করে চাষীদের হয়রানি করা হচ্ছে। তৈরি চায়ের দাম বাজারে থাকলেও কাঁচা চা পাতা বিক্রির সময় চাষীরা নায্য দাম পান না। অনলাইন নিলাম কেন্দ্র হয়েও চাষিরা কোনভাবে উপকৃত হচ্ছেন না। অনেক চাষী আজ ঋণগ্রস্থ। ঋণের টাকায় চা বাগানের পরিচর্যা করছেন। কিন্তু কীটনাশক সহ শ্রমিক খরচে তারা তুলতে পারছেন না। অনেকে কারখানার মালিকদের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে চাষিরা দাম না পেয়ে গাছ তুলে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন।
চা চাষীদের ভূর্তুকির মাধ্যমে মেশিন সহ আধুনিক যন্ত্রপাতি প্রদান, চায়ের দাম প্রতি কেজি ৪০ টাকা নির্ধারণ, সুদ মুক্ত সহজ শর্তে ঋণ দেয়া, চায়ের আইন পরিবর্তন করা সহ ৮ দফা দাবি আগামী ১৫ দিনের মধ্যে মানা না হলে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন বলে হুশিঁয়ারী উচ্চারণ করেন তারা।
মানববন্ধন শেষে চা চাষিরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদে যান। পরে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে ৮ দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারক লিপি প্রদান করেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্মারকলিপিটি গ্রহণ করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে চাষীদের আশ্বস্ত করেন। এছাড়া স্থানীয় সেনা ক্যাম্পে ও স্বারকলিপি প্রদান করেন চা চাষীরা।