পঞ্চগড়ে বাটোয়ারা মামলা করায় ঈদের আগ থেকে বাড়ি ছাড়া ৮ পরিবার!
ডিজার হোসেন বাদশা, পঞ্চগড় প্রতিনিধি:

পঞ্চগড়ে জমির বাটোয়ারা মামলা করায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের ঈদের আগ থেকে প্রতিপক্ষের হামলা, মামলা, ভাঙচুর ও হুমকিতে নিজ বাড়িতে প্রবেশ করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ৮ টি পরিবার।
ঘটনাটি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার কাজলদিঘী কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের বনগ্রাম ঠাকুরপাড়া এলাকায় ঘটেছে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) পঞ্চগড় সদর উপজেলায় এক স্বজনের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী কৃষক জাহাঙ্গীর আলম।
সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, তাদের সাথে ওই এলাকার খোরশেদ আলম ও তার স্বজনদের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। প্রায় ১১ একর জমি নিয়ে বিরোধ উভয় পক্ষের মধ্যে। গত ২৫ জানুয়ারি তারা আদালতে বাটোয়ারা মামলা করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন অপরপক্ষ। ওই পক্ষের প্রায় ৭০ টি পরিবার দলবলে গত ১৪ মার্চ জাহাঙ্গীর, নজরুল, সুলতান, হাসিফুল, সুজন, জমির উদ্দিন ও নবিউলের বাড়িতে কয়েক দফা হামলা করে। রাতে দুটি ট্রাক্টর, ১ টি পিকআপ, ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও নগদ অর্থ, স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ৩ কোটি টাকার সম্পদ লুটপাট করা হয় বলে অভিযোগ করেন তারা। এ সময় আহত হয় তাদের পক্ষের ৭ জন। তাদের বোদা উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। প্রতিপক্ষের হাত থেকে বাঁচতে কোন মতে প্রাণ নিয়ে বাড়ি ছাড়ে ওই ৮ টি পরিবারের অর্ধশত সদস্য। বর্তমানে তারা বাড়ি ছেড়ে নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের বাসায় দিন কাটাচ্ছেন। এ ঘটনায় তারা থানায় মামলা করলেও পুলিশ মামলা নেয়নি বলে দাবি করেন তারা। পরে তারা আদালতে মামলা করতে বাধ্য হন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা বাটোয়ারা মামলা করার পরেই খোরশেদ সবাইকে একত্রিত করে ৭০ টি পরিবার ও ভাড়াটে লোকজন নিয়ে আমাদের উপর হামলা করে। আমরা ৭ জন আহত হই। আমাদের ৮ টি পরিবারের প্রায় ৩ কোটি টাকার সম্পদ লুটপাট করে নিয়ে গেছে তারা। আমাদের নিজ বাড়িতে যেতে দিচ্ছে না তারা। রাস্তায় তারা ধারালো অস্ত্র নিয়ে বসে থাকে। বর্তমানে আমরা মানুষের বাড়িতে পরিবার পরিজন নিয়ে দিন কাটাচ্ছি।
ভুক্তভোগী নজরুল ইসলাম বলেন, খোরশেদ, বিরাম চন্দ্র, ধনীরাম, আব্দুল ওহাব বাবু, জাহাঙ্গীর আলম, আব্দুল ওহাব বকুল, সামাদ, তৌহিদুল, হাসান, শাকিল, রফিকুল, আব্দুল মালেক ও আব্দুল খালেকের নেতৃত্বে আমাদের উপর হামলা হয়েছে। তারা আমাদের ঘরবাড়ি সব ভাঙচুর করেছে। আমাদেরকে বাড়িতে যেতে দিচ্ছে না।
জাহাঙ্গীরের মা মেহেরুন বেগম বলেন, এবারের ঈদ আমরা করেছি মানুষের বাড়িতে। আমাদের সন্তানরা স্কুল যেতে পারছেন না। কৃষি কাজ থেকে শুরু করে কোন কিছুই আমরা করতে পারছি না। প্রতিনিয়ত তারা হুমকি ধামকি দিচ্ছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত খোরশেদ আলম গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, তারাই আমাদের উপর হামলা করে নিজেদের বাড়িঘর বাংচুর করেছে।
এ বিষয়ে বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিম উদ্দিন বলেন, ওই ঘটনায় উভয়পক্ষই মামলা করেছেন। তবে বিবাদীরা আদালতে মামলা করায় বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।