পঞ্চগড়ে মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর, প্রার্থীসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের দুইজন গ্রেফতার
পঞ্চগড় প্রতিনিধি।।
পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তিনটি কালি মন্দিরের ১০ টি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) সকালে এক ইউপি সদস্য প্রার্থীসহ সনাতন ধর্মাবলম্বী দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে আটোয়ারী উপজেলার আলোয়াখোয়া ইউনিয়নের বহুবাধ এলাকার কালিমন্দির, ঠাকুরপাড়া কালীমন্দির ও দোমুর্কী কালিমন্দিরে এই ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার আলোয়াখোয়া ইউনিয়নে আগামী ২৮ নভেম্বর তৃতীয দফার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই ইউনিয়নে আলোয়াখোয়া এলাকার ৫ নং ওয়ার্ডে বর্তমান সদস্য ও শক্তি চন্দ্র পাল এবং শাহাজান আলী নামে দুইজন প্রার্থী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। হিন্দু সম্প্রদায় অধুষ্যিত এই এলাকায় নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতা সৃষ্টি অথবা হিন্দু সম্প্রদায়ের ভোট ও সমর্থন আদায়ের প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে বলে স্থানীয়দের ধারণা। এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে আলোয়াখোয়া এলাকা থেকে ওই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য ও চলমান নির্বাচনের সদস্য প্রার্থী শক্তি চন্দ্র পাল (৪৮) এবং তার সমর্থক সনাতন পাল (২৮) কে গ্রেফতার করা হয়।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে উল্লেখ করে হিন্দ্র সম্প্রদায়ের এই নেতাসহ স্থানীয়দের দাবি করেন, অপরাধী যে কোন ধর্মের হোক, যারাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হোক।
জেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিপেন চন্দ্র রায় বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় হিন্দু, মুসললিম, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান যারাই জড়িত, তাদের গ্রেফতার করা হোক এবং ইতিমধ্যে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানাচ্ছি।
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) রাকিবুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর আমরা ঘটনাস্থলে যাই। এ ঘটনায় ইউপি সদস্য প্রার্থী শক্তি চন্দ্র পাল (৪৮) এবং সনাতন পাল (২৮) নামে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে যে, চলমান ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই অনাকাঙ্খিত এই ঘটনা ঘটানো। তবে তদন্তে আরও ঘটনা বেরিয়ে আসতে পারে। এ ঘটনায় কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না এবং আগামী নির্বাচনকে অবাধ, শুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং ভীতিহীন করার জন্য আমরা আন্তরিকভাবেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।