পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের তিনদিনব্যাপী সালানা জলসা শুরু হয়েছে। আর এ জলসাকে কেন্দ্র করে সহিংসতা এড়াতে নিরাপত্তায় ঢেকেছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়।
জেলা পুলিশ জানায়, আহম্মদনগরের চারপাশে ৪ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ১৬ প্লাটুন বিজিবি, র্যাবের ১৬ টি দলসহ অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীও দায়িত্ব পালন করছেন।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ৯৯ তম এই সালানা জলসা শুরু হয়েছে।
এদিকে বিকেল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। পয়েন্টে পয়েন্টে টহল দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এর আগে জেলা সদরের আহম্মদনগর এলাকায় সম্প্রদায়টির নিজস্ব মাঠে পবিত্র কোরআন তিলোয়াত ও পরে জাতীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় ও সাংগঠনিক পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে জলসার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।
জানা গেছে, জলসা চলবে আগামী বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল পর্যন্ত। তবে গত দুদিন আগ থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পঞ্চগড়ে আসে।
নিরাপত্তার স্বার্থে নিয়োজিত বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্যরা রাতযাপন করছেন জেলা শহরসহ সদর উপজেলার ২৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। ফলে পাঠদান বন্ধ রয়েছে ওইসব প্রতিষ্ঠানগুলোতে।
সালানা জলসার মিডিয়া বিভাগের প্রধান মাহমুদ আহমদ সুমন গণমাধ্যমকে জানান, এবার আমাদের সালানা জলসা করার কথা ছিলো ২৩ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি। আগে করায় আমাদের অনেকেই জলসায় আসতে পারেননি। তবে আমরা এবারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা নিয়ে সন্তুষ্ট।
জেলা পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা বলেন, বাংলাদেশ পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব হলো নাগরিকদের নিরাপত্তা দেয়া, শান্তি শৃঙ্খলা স্থাপন করা। সমস্ত নাগরিকের ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। এসব বিষয়ে সুরক্ষা দেয়ার দায়িত্ব হচ্ছে পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর। এটা নিশ্চিত করার জন্য আমরা কাজ করছি।
পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসাকে কেন্দ্র করে আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জোরদার করেছি। পুলিশের ৪ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করছে। এর বাইরে বিজিবি ১৬ প্লাটুন, র্যাবের ১৬ টি টিমসহ অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে। আশা করি সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে এই জলসা শেষ হবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২ থেকে ৪ মার্চ ৯৮তম সালানা জলসা ঘিরে শহরে সংঘর্ষ, হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুজন নিহত হন। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, সাংবাদিকসহ শতাধিক মানুষ আহত হন। ঘটনার পর ৩২টি মামলায় ১৪ হাজারের বেশি মানুষকে আসামি করা হয়।
এফআর/অননিউজ