পঞ্চগড়ে বেদখলের ২১ বছর পর ১৮ দশমিক ১৮ একর সরকারি খাস জমি উদ্ধার করেছে জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) এক বিজ্ঞোপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পঞ্চগড় জেলা প্রশাসন। এর আগে গত মঙ্গলবার বিকেলে (২৬ এপ্রিল) বিকেলে সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের ভিতরগড় মৌজায় স্যালিল্যান্ড টি স্টেট এর দখলে থাকা চা বাগানসহ জমি উদ্ধার করে লাল পতাকাসহ সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয় প্রশাসন। স্যালিল্যান্ড টি এস্টেট ২০২১ সালে জমিটি অবৈধভাবে দখলে নেয় এবং চা বাগান করে।
জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ১নং খতিয়ানভুক্ত ১৮ দশমিক ২৮ সরকারি সম্পত্তি ভারত সীমান্তের কাছে হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে বেদখল ছিল। এর আগেও একাধিকার জায়গাটি দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নিলেও অজ্ঞাত কারণে পরে তা আলোর মুখ দেখেনি। সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে এবং প্রভাব খাটিয়ে জমির কোন দলিল বা কাগজপত্র ছাড়াই দখলকারীরা ওই জমিতে চা বাগান করে ২১ বছর ধরে চা বিক্রি করে আসছিলেন। স্থানীয়ভাবে শুধু জমিটির বর্তমান বাজার মুল্য প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন কোটি টাকা। এছাড়া জমিতে চা বাগান এর মুল্য আরও কয়েকগুন বৃদ্ধি পেয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নারারণ চন্দ্র বর্মণ এই খাস জমি দখলমুক্ত অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দীপঙ্কর রায়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মো. মাসুদুল হক, অমরখানা ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরুজ্জামান নুরু, সদর থানা পুলিশের একটি দলসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।
স্যালিল্যান্ড টি এস্টেট এর ম্যানেজার মো. আব্দুস সালাম বলেন, জোড়পূর্বক দখলে রাখার বিষয়টি ঠিক না। ব্রকারের (দালাল) মাধ্যমে আমরা ২১ বছর আগে এই জমি ক্রয় করে আমরা চা বাগান করি। পরবর্তিতে জানতে পারি যে, বাগানের প্রায় ১৮ একর জমি ১নং খাস খতিয়ানভূক্ত। এরপর আমরা জমিটি স্থায়ী বন্দোবস্তের জন্য নিয়ম মেনে জেলা প্রশাসন কার্যালয় এবং ভূমি মন্ত্রনালয়ে আবেদন করি। ভূমি মন্ত্রনালয়ের একটি টিম জমি পরিদর্শনও করেছেন। কিন্তু আমরা যথাযথ শর্ত মেনে নিয়ম অনুযায়ী বন্দোবস্তের আবেদন করেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি খাস সম্পত্তি উদ্ধার আমাদের একটি নিয়মিত কার্যক্রম। তবে আশ্রয়ণ-২ এর কারণে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে দুই শতাংশ জমিসহ গৃহ উপহার প্রদান করা হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্পটি বাস্তবায়নে আমাদের বিপুল পরিমাণ খাস সম্পত্তির প্রয়োজন। এজন্য রমজান মাসেও জমি উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৮ দশমিক ২৮ একর খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে।