পঞ্চগড়ে ভূট্টার আশানুরূপ ফলন ও দ্বিগুণ দামে খুশি ভূট্টা চাষীরা
পঞ্চগড় প্রতিনিধি।।
পঞ্চগড়ে চলতি মৌসুমে ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। আশানুরূপ ফলনের পাশাপাশি ভালো দাম পেয়ে খুশি ভূট্টা চাষীরা। গত বছর প্রতি বস্তা (৮০ কেজি) ভুট্টা ৯০০ টাকা থেকে ১১০০ টাকা দরে বিক্রি করলেও এ বছর তারা তা বিক্রি করছেন ২ হাজার টাকা থেকে ২২০০ টাকা দরে। গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ দাম পেয়ে খুশি এ জেলার চাষীরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, গত বছরের চেয়ে এবছর ভূট্টার আবাদ কমেছে এ জেলায়। লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৩০ হাজার ১৫০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ২৯ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে। আর গত বছর আবাদের পরিমাণ ছিলো ৩০ হাজার ১২০ হেক্টর।
বুধবার (০১ জুন) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ইতোমধ্যেই অনেক ক্ষেত থেকে ভুট্টার মোচা তোলা হয়ে গেছে। কোথাও কৃষকেরা মোচা সংগ্রহ করছেন, আবার অনেকেই ব্যস্ত রয়েছেন মাড়াইয়ের কাজে।
ভূট্টা চাষীরা জানান, গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে ভূট্টা। ফলনও হয়েছে একর প্রতি ৩ মেট্রিক টনেরও বেশি। এবছর ভালো ফলনের সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত দাম পাওয়ায় আগামীতে ভূট্টা চাষ বৃদ্ধি পাবার সম্ভাবনা দেখছেন তারা।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ ও গবাদিপশু লালন-পালন বেড়েছে। আর মাছের ও গবাদিপশুর খাবার তৈরিতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন পড়ছে ভুট্টার। তাই ভুট্টার চাহিদাও থাকছে সব সময়। এ কারণে দামটা বেড়েছে। চাষিরাও লাভবান হচ্ছেন। ভুট্টা চাষে আগ্রহও বাড়ছে।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের পৌটিয়াপাড়া এলাকার কৃষক আব্দুল আজিজ জানান, এবছর ৩ একর জমিতে ভূট্টার আবাদ করেছেন। খরচ ৭০ হাজার টাকার মত। ফলন ভালো হওয়ায় ৫ মেট্রিকটন ভূট্টা উৎপাদনের আশাবাদি তিনি। আশানুরূপ ফলন পেলে দুই লাখ টাকারও বেশি বিক্রি করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন আব্দুল আজিজ।
গোয়ালপাড়া এলাকার কৃষক সুজন মিয়া জানান, ৭ বিঘা জমি ইজারা নিয়ে ভূট্টার আবাদ করেছি । ৭ বিঘা জমির ভাড়া দিতে হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। এর বাইরে বিঘা প্রতি খরচ ৮ হাজার টাকার মত। তারপরও দাম ঠিক থাকলে সব মিলিয়ে লাভ হবে এক লাখ টাকা। জমি নিজের হলে লাভ হতো আরো বেশি।
এ বিষয়ে পঞ্চগড় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার সাদেক বলেন, পঞ্চগড় জেলার মাটি কৃষি ক্ষেত্রে অনেক উপযোগী একই সাথে ভূট্টা চাষের জন্য বেশ উপযোগী। এবার পঞ্চগড়ে আশানুরূপ ফলন হয়েছে ভূট্টার। চাষীরা ভালো ফলন উৎপাদনের জন্য ভালো বীজ যেন পায় সেটা কৃষি বিভাগ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। এ বছর ভুট্টার বাজারও ভালো। উৎপাদনও হয়েছে ভালো। আমরা আশা করছি আগামী বছর ভুট্টা চাষ আরও বাড়বে।