পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার লক্ষীপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় আরফি আক্তার এক শিক্ষার্থীকে বিজ্ঞান বিভাগের পরিবর্তে কলা বিভাগে যুক্ত করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষা দিতে চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী।
ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায়। অধ্যয়নরত আরফি ওই ছাত্রী মাদ্রাসার দাখিল শ্রেণীর ছাত্রী।
অভিযোগে বলা হয়, আরফি আক্তার নামে ওই ছাত্রী মাদ্রাসায় বিজ্ঞান বিভাগে অধ্যয়নরত। ভর্তির পর থেকে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করে আসছে সে। কিন্তু দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে গেলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানায় তাকে বিজ্ঞানের পরিবর্তে কলা বিভাগে ফরম পূরণ করতে হবে। বিষয়টি পরিবারকে জানানো হলে ওই ছাত্রীর বাবা আনছারুল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে অনুনয় বিনয় করে, কিন্তু কোন কাজ হয়নি। অধ্যক্ষ মহোদয় জানান এবং আশ্বাস দেন কলা বিভাগে আরফিকে পাশ করার সকল ব্যবস্থা করে দিবে, তাই তাকে কলা বিভাগে থাকতে হবে। কিন্তু বিজ্ঞান বিভাগে ফরম পূরণ সম্ভব নয়। তাই জেলা প্রশাসক ও উপজেলা-জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর গত মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) লিখিত অভিযোগ করে যেন বিজ্ঞান বিভাগেই দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ সহযোগীতা কামনা করেন ওই শিক্ষার্থী।
অভিযোগকারী আরফি আক্তার জানান, বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী হওয়া স্বত্বেও কর্তৃপক্ষের ভুলের কারণে কলা বিভাগ করে দেয়া হয়েছে। আমি ভর্তির পর থেকে বিজ্ঞান বিভাগে মাদ্রাসায় ক্লাস ও পড়াশোনা করে এসেছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষের ভুলে এখন আমার স্বপ্ন ভাঙ্গার পথে। আমি সহযোগীতা চাই যাতে বিজ্ঞান বিভাগেই ফরম পূরণ করে পরীক্ষা দিতে পারি।
আরফির বাবা আনছারুল ইসলাম জানান, আমার মেয়েকে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে ভর্তি করে দেয়া হয়েছিলো। এতদিন ধরে সে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছে। এখন হঠাৎ ফরম ফিলাপ করতে গেলে সুপার সাহেব বলেন আমার মেয়ের কলা বিভাগে ফিলাপ হয়েছে। এমন ঘটনায় মেয়ে ও আমরা চিন্তায় পড়ে গেছি। সুপার সাহেবের কাছে বিজ্ঞানে ব্যবস্থা করে দিতে বললে তারা বলেছে তারা নাকি পাশ করে দেয়ার ব্যবস্থা করে দিবে কলা বিভাগ থেকে। আমার মেয়ে যেহেতু বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছে তাই আমরা বিজ্ঞান বিভাগ চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেছি। কারণ এতদিন সে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছে, হঠাৎ করে কলা বিভাগ নিতে বললে সে কিভাবে পরীক্ষা দিবে।
লক্ষীপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার সুপার আব্দুল মতিন জানান, সেই ছাত্রী বিজ্ঞান বিভাগের জন্য যোগ্য না। তাই তাকে কলা বিভাগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা না বুঝে অভিযোগ করেছে। যাই হোক আমরা বোর্ডের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করছি। দেখা যাক কি হয়।
এ বিষয়ে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি দেখার জন্য আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সাথে ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যাতে বোর্ডে যোগাযোগ করে ওই ছাত্রীর ফরম ফিলাম বিজ্ঞান বিভাগে করা হয়। ইতি মধ্য প্রধান শিক্ষককে বোর্ডে গিয়ে বিষয়টি সংশোধন করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।