পদ্মা থেকে রাসেল ভাইপার জব্দ, গড়াই নদীতে অবমুক্তকরণ
জাহাঙ্গীর হোসেন জুয়েল, কুষ্টিয়া
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পদ্মা নদী থেকে একটি বিষধর রাসেল ভাইপার সাপ জব্দ করে গড়াই নদীতে অবমুক্তকরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে উপজেলার কয়া ইউনিয়নের সৈয়দ মাসুদ রুমী সেতুর নীচে গড়াই নদে অবমুক্তকরণ করা হয়। অবমুক্তকরণ করেন উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তারা।
উপজেলা বনবিভাগের কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, পদ্মা নদীতে মাছ ধরা দুয়ার জালে বিষাক্ত রাসেল ভাইপার আটকা পড়ে। সকালে খবর পেয়ে বিলপ্তি প্রায় এই সাপটি জব্দ করা হয়। এবং গড়াই ব্রীজের ( সৈয়দ মাসুদ রুমী সেতু) নীচে অবমুক্তকরণ করা হয়েছে।’
এদিকে গড়াই নদে বিষাক্ত রাসেল ভাইপার সাপটি অবমুক্তকরণ করায় আতঙ্কে রয়েছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা। তাঁরা বলেন, নদীর পাড়ে হাজার হাজার মানুষের বসবাস। এখানকার মানুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে নদী ব্যবহার করেন। কিন্তু এখানে এত ভয়ংকর সাপটি ছেড়ে দেওয়া ঠিক হয়নি। এযেন সাগর থেকে থেকে এনে কুয়াতে ফেলা হলো।
জানা গেছে, উপজেলার কয়া ইউনিয়নের বানিয়াপাড়া গ্রামের জেলে শামিম হোসেন প্রতিদিনই পদ্মায় দোয়াড় জালের ফাঁদ পেতে মাছ শিকার করেন। মঙ্গলবার সকালে জাল থেকে মাছ বের করতে যান। জালে মাছের পরিবর্তে সাপ দেখ দেখতে। প্রথমে তিনি অজগর সাপ মনে করে স্থানীয়দের খবর দেন। পরে বনবিভাগের লোকজন এসে তাকে জানায় এটা বিষধর রাসেল ভাইপার সাপ। পরে সাপটিকে বনবিভাগের লোকজন নিয়ে যান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানা গেছে, রাসেল ভাইপার সাপটি খুবই বিষাক্ত। সাপটি বাংলাদেশে চন্দ্রবোড়া বা উলুবোড়া নামেও পরিচিত। দেশে সেসব সাপ দেখা যায়, তাদের মধ্যে রাসেল ভাইপার সবচেয়ে বিষাক্ত। এসাপের কামড়ে শরীরের দংশ অংশে বিষ ছড়িয়ে অঙ্গহানি, ক্রমাগত রক্তপাত, রক্তজমাট বাঁধা, স্নায়ু বৈকল্য, চোখ ভারি হয়ে যাওয়া, পক্ষাঘাত, কিডনির ক্ষতিসহ বিভিন্ন রকম শারীরিক উপস্বর্গ দেখা যেতে পারে।
জেলে শামিম হোসেন বলেন, ‘ প্রতিদিনই দোয়াড়ে জাল পেতে পদ্মায় মাছ ধরি। সকালে জাল তুলে দেখি একটি অন্যরকম সাপ। যা আগে কখনও দেখিনি। প্রথমে অজগর মনে করেছিলাম। পরে বনবিভাগের লোক এসে বললেন এটি বিষাক্ত রাসেল ভাইপার। সাপটি বনবিভাগ নিয়ে গেছেন।’
উপজেলা নাগরিক কমিটির সভাপতি আকরাম হোসেন, পদ্মা থেকে এনে গড়াইয়ে ছেড়ে দিয়ে লাভ কি হলো। বরং গড়াই পদ্মার চেয়ে বেশি লোকালয়। এটা দায়সারা কাজ হয়েছে। অনেক দুরে কোথাও ফাঁকা স্থানে অবমুক্তকরণের দরকার ছিল।
জেলা বনবিভাগের বনকর্মকর্তা জি এম মোহাম্মদ কবির বলেন, ধারনা করা হচ্ছে সাপটি ভারত থেকে পদ্মা নদী হয়ে এসেছে। জব্দ করার পর গড়াই নদে অবমুক্তকরণ করা হয়েছে। এতে আতঙ্কের কিছু নেই। নদী বেয়ে অন্যত্র চলে যাবে।
কুমারখালী থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন,এখানে আমাদের কিছু করার নেই। বিষয়টি বনবিভাগের। তাঁরাই ভাল বলতে পারবেন।’