পাবনার ঈশ্বরদীতে ভারতীয় নাগরিক হত্যা মামলায় এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। তার নাম নাসিমা খাতুন (৩০) । একইসাথে তাকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদন্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। নিহত ভারতীয় নাগরিকের নাম আজব লাল যাদব (৫০)।
মঙ্গলবার (১০ মে) বেলা আড়াইটার দিকে পাবনার বিশেষ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আহসান তারেক এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামি নাসিমা আক্তার ঈশ্বরদী উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের সাইফুল্লাহর মেয়ে। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণা শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার বরাত দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবি অ্যাডভোকেট দেওয়ান মজনুল হক জানান, ভারতের বিহার প্রদেশের মাধুরাণী জেলার বাসিন্দা আজব লাল যাদব ২০১৪ সালের ২৮ মে ঈশ্বরদীর রশিদ ওয়েল মিলে রিফাইনারি ইনচার্জ হিসেবে যোগ দেন। সেখানে ২০১৬ সাল অক্টোবর পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। ২০১৬ সালের ১৬ অক্টোবর রশিদ ওয়েল মিল থেকে চাকুরিচ্যুত হয়ে তিনি অন্যত্র চাকুরী নেন। সে সময় তিনি উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের সাইফুল্লাহর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভাড়া থাকার সুবাদে বাড়ির মালিকের মেয়ে নাসিমা খাতুনের সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। তিনি প্রচুর পরিমাণে মদপানও করতেন।
২০১৭ সালের ৬ মে কালিকাপুর গ্রামে সাইফুল্লাহর ভাড়া বাড়িতে থেকে বিষক্রিয়ায় গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় পরদিন ৭ মে ঈশ^রদী থানার তৎকালীন এসআই আব্দুর রাজ্জাক বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামাকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা বাড়ির মালিক সাইফুল্লাহর মেয়ে নাসিমা খাতুনকে একমাত্র আসামী করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
তদন্তে আজব লাল জাদবকে বিয়ের প্রলোভনে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ফলের জুসের সাথে বিষপান করিয়ে হত্যার বিষয়টি উঠে আসে। দীর্ঘদিন মামলার শুনানী ও স্বাক্ষ্য শেষে এ রায় ঘোষণা করেন বিচারক।
রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবি ছিলেন, অ্যাডভোকেট দেওয়ান মজনুল হক, আর আসামীপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান।