পেয়াজ আমদানির অনুমতি চেয়ে বানিজ্য মন্ত্রনালয়কে চিঠি দিলো জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর

হিলি প্রতিনিধি

সম্প্রতি হঠাৎ করেই বাড়তে শুরু করেছে পেয়াজের দাম এমন অবস্থায় আসন্ন কুরবানীর ঈদে পেয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখতে পেয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বানিজ্য মন্ত্রনালয়কে পত্র দিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর। এর ফলে পেয়াজের ইমপোর্ট পারমিট (আইপি) দিতে পারে এমন খবরে হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা পেয়াজ আমদানি করতে আইপির জন্য আবেদন করতে শুরু করেছেন। পেয়াজের আমদানি শুরু হলে আসন্ন কুরবানীর ঈদে দাম যেমন স্থিতিশীল থাকবে তেমনি পেয়াজের দাম ২৫টাকায় নামবে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকরা।

হিলি বাজারের পেয়াজ বিক্রেতা শাকিল খান বলেন, ভারত থেকে পেয়াজ আমদানি বন্ধ থাকলেও বাজারে পর্যাপ্ত দেশীয় পেয়াজের সরবরাহ থাকায় দাম নাগালের মধ্যে ছিল। কিন্তু গতকয়েকদিন ধরে পাবনা মেহেরপুরসহ বিভিন্ন মোকামে পেয়াজের সররবাহ কমায় দাম বাড়তে শুরু করেছে। আগে যে ১হাজার ২শ টাকা প্রতি মন বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে ১ হাজার ৬শ থেকে ৭শ টাকা মন বিক্রি হচ্ছে। যার কারনে বাড়তি দামে কিনতে হওয়ায় আমাদেরকে বাড়তি দামে পেয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে। বর্তমানে পেয়াজ ৪০টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে যা কয়েকদিন আগে ৩০টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। তবে পেয়াজ আমদানির অনুমতি দিচ্ছে বা দিবে এমন খবরে বর্তমানে বাজার স্থিতিশীল হয়ে আছে। এক ধাক্কায় যা বেড়েছে এর পর এখন পর্যন্ত আর বাড়েনি আর ভারত থেকে আমদানি শুরু হলে পেয়াজের দাম কমবে।

হিলি স্থলবন্দরের পেয়াজ আমদানিকারক মোবারক হোসেন বলেন, সরকার নতুন করে পেয়াজ আমদানির অনুমতি পত্র (আইপি) বন্ধ করে রাখার কারনে পুর্বের আইপির বিপরীতে গত ৫ মে পর্যন্ত পেয়াজ আমদানির সময় থাকলেও ঈদের ছুটির কারনে ২৮শে এপ্রিল পর্যন্ত বন্দর দিয়ে পেয়াজ আমদানি হয়েছে।এরপর থেকে প্রায় ২মাসের মতো সময় ধরে পেয়াজের আমদানি বন্ধ রয়েছে। তবে দেশীয় পেয়াজের সররবাহ ভালো থাকায় বেশকিছুদিন ধরে দাম কম থাকলেও সম্প্রতি দেশীয় পেয়াজের সররবাহ কমায় দাম উদ্ধমুখি হতে শুরু করেছে। এর উপর সামনে ঈদুল আযহার কারনে সেসময়ে পেয়াজের বাড়তি চাহীদা থাকে ওই সময়ে পেয়াজের আরো দাম বাড়ার আশংকা রয়েছে। এমন অবস্থায় পেয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বানিজ্য মন্ত্রনালয়কে পত্র দিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর। এর ফলে আমরা মনে করছি হয়তোবা দুয়েকদিনের মধ্যে পেয়াজ আমদানির অনুমতি দিতে পারে। এর ফলে আমাদের অনেক আমদানিকারক ইতোমধ্যেই পেয়াজ আমদানি করতে আইপির জন্য আবেদন করেছেন। এখন যদি সেই চিঠির প্রেক্ষিতে বানিজ্য মন্ত্রনালয় কৃষি মন্ত্রনালয়কে নিয়ে বৈঠক করে পেয়াজের আইপির অনুমোদন দেয় তারপরে আমরা এলসি খুলবো এর পর থেকে বন্দর দিয়ে পেয়াজ আমদানি শুরু হতে পারে। তবে আজকে এখন পর্যন্ত কোন প্রকার আইপির অনুমোদন দেয়নি তবে আমরাও শুনছি হবে হচ্ছে এই অবস্থায় রয়েছে। আজকের মধ্যে না হলে আগামী রবিবারের মধ্যে সঠিক বিষয়টি পরিষ্কার বুঝা যাবে। আর যদি আইপি দেয় সেক্ষেত্রে এর পর থেকে বন্দর দিয়ে আবারো পেয়াজ আমদানি শুরু হতে পারে। এতে করে বর্তমানে দেশের বাজারে যে পেয়াজের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে রয়েছে সেটি স্থিতিশীল অবস্থায় আসবে দাম ২৫টাকার মধ্যে চলে আসবে বলেও জানান তিনি।

হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে সর্বশেষ গত ২৮ শে এপ্রিল বৃহস্পতিবার ৩৭টি ট্রাকে ১হাজার ৩৪টন পেয়াজ আমদানি হয়েছিল। ঈদের ছুটির পর ৬ মে থেকে বন্দর দিয়ে পুনরায় আমদানি রফতানি কার্যক্রম শুরু হলেও পেয়াজ আমদানি একেবারে বন্ধ রয়েছে। ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জেনেছি সরকার নাকি পেয়াজের ইমপোর্ট পারমিট (আইপি) না দেওয়ায় এর পর থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে

হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী সংগনিরোধ কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বলেন, দেশীয় কৃষকের স্বার্থ বিবেচনায় গত ৫ মে এর পর থেকে কোন পেয়াজের আইপি ইস্যু করেনি মন্ত্রনালয়। এর ফলে হিলিসহ দেশের সবগুলো স্থলবন্দর দিয়ে ওই সময় থেকে ভারত থেকে পেয়াজ আমদানি সম্পুর্নরুপে বন্ধ রয়েছে। এখন পর্যন্ত পেয়াজের আইপি প্রদানের কোন খবর আমাদের নিকট আসেনি। তবে সম্প্রতি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিপ্তর বাজার জরিপ করে তারা পেয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া প্রয়োজন অনুভব করে বানিজ্য মন্ত্রনালয়কে একটি চিঠি দিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কৃষি মন্ত্রনালয় থেকে পেয়াজের আইপি দেওয়ার বিষয়ে কোন সিন্ধান্তের কথা আমাদের জানানো হয়নি।

আরো দেখুনঃ