আগুনের লেলিহান শিখার কাছে সব হারিয়ে নি:স্ব বঙ্গবাজারের হাজার হাজার ব্যবসায়ী। কিছুই অবশিষ্ট নেই, সব সহায়সম্বল পুড়ে খাক। রুজি-রোজগারের শেষ সম্বল হারা মানুষগুলোর বুক ফাটা আর্তনাদ আর শোকে স্তব্ধ গোটা এলাকা।
কিশোরগঞ্জের ইয়াসিন। বঙ্গবাজারে ১৮ বছর ধরে তৈরি পোশাকের ব্যবসা করে আসছেন। শ্রম আর ঘাম ঝরিয়ে তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন বেঁচে থাকার অবলম্বনটুকু। অথচ চোখের সামনেই আগুনের লেলিহান শিখা কেড়ে নিলো তার কোটি টাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ইয়াসিন বলেন, “আমার প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতির সম্পদ এখন সব কয়লা। কোনো মাল বাচানোর সুযোগই পাইনি।” পোড়া কয়লার মধ্যে হাতড়ে ফিরছে মানুষ। ধ্বংসস্তূপে যদি কিছু মিলে। কিন্তু কিছুই যে নেই অবশিষ্ট। ক্ষতিগ্রস্তদের এই কষ্ট কে বুঝবে- কেইবা ঘোচাবে।
ব্যবসায়ীরা জানান, আগুন দ্রুতই সব শেষ করে দিয়েছে। আগুনের থাবা থেকে যেটুকু সম্ভব রক্ষা করার চেষ্টাও ছিলো কারো কারো। রুজি-রোজগারের অবলম্বন মাথায় নিয়ে তাই দিগবিদ্বিগ ছুটে চলা। স্থানীয় দোকানদাররা জানান, প্রকৃত মালিকরা মাল পায়নি, সুযোগ সন্ধানী কিছু মালামাল বের করে নিয়েছে। আমাদেরকে ঢুকতেই দেয়নি, টাকা-পয়সাও বের করতে পারি নাই। একজন জানালেন, তার দোকানে নগদ ১০ লাখ টাকা ছিল।
ব্যবসায়ীর বলেন, ঈদকে সামনে রেখে ব্যাংক ঋণ নিয়ে মালামাল উঠানো হয়েছিল। সবার দোকানেই মাল ভরপুর ছিল। এখন সবকিছুই শেষ, পথের ফকির। ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা দোকানে পুঁজি খাটিয়েছেন বাড়তি লাভের আশায়। ব্যাংক নিয়েছেন মোটা অংকের ঋণ। কিন্তু আগুন তাদের সেই স্বপ্ন পুড়িয়ে যেনো পথে বসিয়ে দিলো। আগুনের থামা থেকে যেটুকু মালামাল রক্ষা করেছেন ব্যবসায়ীরা, এর উপর নির্ভর করে তাদের হয়তো নতুন যাত্রা শুরু হবে। তবে আগুন আসলে কি কারণে লেগেছে, কোথা থেকে লেগেছে, সেই কারণ অনুসন্ধান করে ব্যবস্থার আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সেই সাথে সরকারের সহযোগিতাও কামনা করছেন তারা।
ফরহাদ/অননিউজ