একদল ভূমিদস্যু ও দুর্বৃত্তের প্রতিহিংসার বলি হলো একটি সাজানো কলা বাগান। পূর্ব শত্রুতা ও জমি দখলের হীন উদ্দেশ্যে কয়েকশ ফলন্ত ও বেড়ে ওঠা কলা গাছ কেটে সাবাড় করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্ত জমির ওপর নিথরভাবে পড়ে আছে ক্ষত-বিক্ষত গাছগুলো, যা দেখে স্থানীয় কৃষক ও এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
ঘটনাটি ঘটেছে নীলফামারী সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নে দুবাছুরি সরকারপাড়ায়। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে একটি ফলন্ত কলাবাগান ধ্বংস ও জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গত ১৯ ডিসেম্বর বিকেলে উপজেলার দুবাছুরি সরকারপাড়া এলাকায় এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার নীলফামারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
প্রাপ্ত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের দুবাছুরি সরকারপাড়া এলাকার লিপি রানী সরকার তার পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত ৩২ শতক জমিতে প্রায় ৪০০টি কলাগাছ রোপণ করেছিলেন। এই জমি নিয়ে স্থানীয় দুলাল চন্দ্র শীল গংদের সাথে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ালে, নীলফামারী সিনিয়র সহকারী জজ আদালত (মামলা নং- ৬৮/২০২১ইং) লিপি রানী সরকারের পক্ষে রায় ও ডিক্রি প্রদান করেন।
আদালতের রায়ে জমির মালিকানা নিশ্চিত হওয়ার পর সেখানে চাষাবাদ শুরু করেন লিপি রানীর পরিবার। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রতিপক্ষ দুলাল চন্দ্র শীলের নেতৃত্বে একদল লোক অতর্কিত হামলা চালিয়ে বাগানের সবকটি কলাগাছ কেটে সাবাড় করে দেয়। ভুক্তভোগীদের দাবি, ধ্বংসকৃত এই বাগানের আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
খবর পেয়ে লিপি রানীর ভাই শ্যামল চন্দ্র সরকার কলাক্ষেতে গেলে প্রতিপক্ষ স্থানীয় ইউপি সদস্য গোলাম রব্বানীর উপস্থিতিতে এবং দুলাল চন্দ্র শীল, শান্ত শীল, সাগর শীল, নির্মল চন্দ্র সরকার, হিমাংশু চন্দ্র সরকার, সুধাংশু সরকারের নেতৃত্বে আরো কয়েকজন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকী দেয়।
শ্যামল চন্দ্র সরকার অভিযোগ করে বলেন, মহামান্য আদালত থেকে রায় পেয়ে আমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহোদয়ের সাথে পরামর্শ করে ওই জমিতে চাষাবাদ শুরু করি কিন্তু প্রতিপক্ষরা আদালতের রায় উপেক্ষা করে তাদের জমি বলে বল প্রয়োগ করছে। যা বেআইনি।
শ্যামল বলেন, জমি নিয়ে আমরা চরম শংকায় রয়েছি। প্রতিপক্ষরা যেকোন সময় আমাদের উপর হামলা চালাতে পারে। মুঠোফোনে বিভিন্ন সময় আমাকে হত্যার হুমকী দেয়া হচ্ছে। বাধ্য হয়ে আমি নীলফামারী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করি।
জানতে চাইলে দুলাল চন্দ্র শীল অভিযোগ করে বলেন, আমি আমার জমি দখল করেছি। কার্তিক চন্দ্রের জমির সাথে তাদের (লিপি রানী সরকার) জমির মালিকানা নিয়ে দ্বন্ধ চলছে। আদালতে আমার কোন মামলা নেই।
লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য গোলাম রব্বানী জানান, এখানে ব্যাপার রয়েছে। এ বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে পারবো না।
জানতে চাইলে নীলফামারী থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) জিল্লুর রহমান জানান, দুই পক্ষ থানায় অভিযোগ করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রধান সম্পাদক: হুমায়ুন কবির রনি
মোবাইল: ০১৭১৬-৫৩০৫১৪
ইমেইল: onnews24@gmail.com
www.onnews24.com