যেকোনো প্রাণীর জন্মের জন্য প্রয়োজন হয় শুক্রাণু এবং নিষিক্ত ডিম্বাণু। প্রচলিত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ভ্রুণ উৎপন্ন করতে চাইলেও শুক্রাণু এবং ডিম্বাণু ছাড়া তা সম্ভব নয়। তবে ইসরায়েলের একদল বিজ্ঞানী প্রকৃতির চিরসত্য এই নিয়মকে মিথ্যা প্রমাণিত করে শুক্রাণু ও ডিম্বাণু ছাড়াই ভ্রুণ তৈরি করে দেখিয়েছেন। সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক ও রাসায়নিক উপায়ে প্রাণীর ভ্রুণ উৎপন্ন করতে সক্ষম হয়েছেন তারা, যা ইতিহাসে এই প্রথম। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
বিজ্ঞান ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘সেল’ এ গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের উইজমান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সের একদল বিজ্ঞানীর এই অসামান্য সাফল্যে এনে দিয়েছেন বিজ্ঞানকে। ‘অ্যাসিসটেড রিপ্রোডাকশন টেকনোলজি’ পদ্ধতিতে একটি ইঁদুরের ভ্রুণ সফলভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে।
তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভ্রুণ সৃষ্টি করা মানেই একটি প্রাণীকে সৃষ্টি করা গেছে তা বলা যায় না। কারণ ভ্রুণ থেকে একটি পরিপূর্ণ প্রাণী হিসেবে জন্ম দিতে অনেক জটিল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তবু মানব ইতিহাসে মানুষের হাত দিয়ে একটি পরিপূর্ণ ভ্রুণ সৃষ্টির এই গবেষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
যদিও ইঁদুরের ভ্রুণ তৈরি করা গেলেও এই উপায়ে মানুষের ভ্রুণ সৃষ্টি করার বিষয়ে এখনই কোনো পরিকল্পনা নেই বিজ্ঞানীদের। তারা বলছেন, প্রথমত ডিম্বাণু-শুক্রাণু ছাড়া মানুষের ভ্রুণ তৈরি করার প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত জটিল। তাছাড়া, সৃষ্টির বিরুদ্ধে গিয়ে মানুষ মানুষকে সৃষ্টি করার বিষয়টি ধর্মীয় ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত স্পর্শকাতর। তাই এখনই এ বিষয়টি নিয়ে এগোনোর পরিকল্পনা নেই তাদের। তবে বিতর্ক থাকলেও বিজ্ঞানের অগ্রগতির হিসেবে এই আবিষ্কার ভবিষ্যৎকে পাল্টে দেয়ার ক্ষমতা রাখে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।