বছর ঘুরতেই দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জন্য আরেকটি সুখবর। এবার রাজধানী থেকে সরাসরি চলাচল করবে ট্রেন। রেললাইন পুরোপুরি প্রস্তুত, ৭ সেপ্টেম্বর পরীক্ষামূলক চলাচল। এদিন রাজধানীর কমলাপুর সংলগ্ন ঢাকা স্টেশন থেকে যাত্রা করে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে প্রথমবারের মত সরাসরি ফরিদপুরের ভাঙ্গা পৌঁছাবে একটি পূর্ণাঙ্গ ট্রেন।
নারায়ণগঞ্জগামী ট্রেনের ঢাকা স্টেশন। আর এখান থেকেই পদ্মার বুক চিরে পাড়ি দিতে এঁকেবেঁকে চলে গেছে স্বপ্নের রেললাইন। শুরুতেই বুড়িগঙ্গা পাড়ি সুউচ্চ সেতুটি দিয়ে। নৌযানের চলাচলে সুবিধা করতে এই উচ্চতা।
এরপর উড়ালপথ ধরে কেরানীগঞ্জে। দেশের প্রথম এলিভেটেড রেলস্টেশন এখানেই। এঁকেবেঁকে চলা উড়াল রেললাইন, ধলেশ্বরী পার হয়ে মাটি ছুঁয়েছে ফের। নিমতলি আর মাওয়া স্টেশন হয়ে স্বপ্নের সেতু দিয়ে প্রমত্তা পদ্মা পাড়ি।
রেল প্রকল্পের সংশ্লিষ্টরা জানান, বুড়িঙ্গা ব্রিজের দৈর্ঘ্য ৪শ’ মিটার, এর মধ্যে চারটি স্প্যান রয়েছে। নেভিগেশন ক্লিয়ারিংয়ের জন্য ওখানে উচ্চতা বেশি করা হয়েছে। মাওয়া-ভাঙ্গা সেকশনে চারটি স্টেশন রয়েছে। অত্যাধুনিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা রয়েছে, সেক্ষেত্রে পুরনো আমলের স্টেশনের মাস্টারকে গিয়ে প্রতিবার ট্রেন চেক করার প্রয়োজন হবে না।
গেল এপ্রিলে ভাঙ্গা থেকে পদ্মাসেতু দিয়ে পরীক্ষামূলক চলছে ট্রেন। এবার যুক্ত হলো ঢাকা। মোট লাইন বসল ৮২ কিলোমিটার। নদীর ওপারে পদ্মা ও শিবচর স্টেশনের কাজ ৯০ ভাগের ওপর সম্পন্ন। আর ভাঙ্গা জংশন এখন রেল চলাচলের উপযোগী শতভাগ।
পরীক্ষামূলক চলাচলে সবকিছু ইতিবাচক হলে অক্টোবরে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন জাতির পিতার কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পদ্মা রেল লিংক প্রকল্প ব্যবস্থাপক-২ বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আহমেদ জামিউল ইসলাম বলেন, “ঢাকা থেকে মাওয়ার অংশের দূরত্ব ৩৯ কিলোমিটার। এটার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড বায়াডাক্ট। ট্রাকের ৯৫ কাজ শেষ হয়েছে।”
পরিকল্পনা মত, যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ইঞ্জিন ও চীনের তৈরি সাতটি নতুন বগি দিয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা পুরো পথে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো শুরু হবে। প্রকল্প ব্যবস্থাপক-১ বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আহমেদ বলেন, “৭ তারিখ সবাইকে নিয়ে ঢাকা থেকে রওয়ানা হবো। তবে সর্বোচ্চ গতিতে যাবনা।”
ভাঙ্গা-মাওয়া অংশে ট্রেন চলাচলের অত্যাবশ্যক শতভাগ সিগন্যালিং ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হলেও ঢাকা পর্যন্ত এ কাজ এখন চলমান। পদ্মা সেতু চালুর প্রথমে সবার মনে প্রশ্ন ছিল কবে চালু হবে পদ্মার এপাড়-ওপাড়ে রেল। সেটা পূরণ হতে যাচ্ছে। ভাঙ্গা থেকে মাওয়া হয়ে ঢাকা পর্যন্ত রেললাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। আগামীকাল ৭ তারিখ শুরু হচ্ছে পরীক্ষামূলক রেল চলাচল। আর সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এ বছরের কোন এক সময়ে পদ্মায় যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এফআর/অননিউজ