সফররত সৌদি আরবের মদিনায় পবিত্র মসজিদে নববী ইমাম শেখ ড. আবদুল্লাহ বিন আবদুর রহমান আল-বুয়াজান বাংলাদেশকে তার দ্বিতীয় দেশ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেন, দুই দেশের ভৌগোলিক দূরত্ব সত্ত্বেও বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের জনগণ ধর্মীয় বন্ধনের কারণে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে শেখ ড. আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান আল-বুয়াজান একথা বলেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে বলেন, মদিনায় পবিত্র মসজিদে নববীর ইমাম বলেছেন বাংলাদেশ তার দ্বিতীয় দেশ ।
শেখ ড. আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান আল-বুয়াজান বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের জনগণের মঙ্গল ও উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছেন।
প্রেস সচিব বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করেন এবং তাঁকে পবিত্র ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর খেদমত করার তৌফিক দান করার জন্য মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন।
শেখ ড. আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান আল-বুয়াজান প্রধানমন্ত্রীকে জানান, মসজিদে নববীতে কর্মরত খাদেমদের অধিকাংশই বাংলাদেশী নাগরিক।
সারাদেশে নির্মিত মডেল মসজিদ প্রসঙ্গে পবিত্র মসজিদে নববীর ইমাম বলেন, যারা মসজিদ নির্মাণ করে মহান আল্লাহ তাদের অনেক নেয়ামত দান করেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় মসজিদে নববীর ইমামকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ২০২৩ সালের জাতীয় ইমাম সম্মেলনে তার উপস্থিতি বাংলাদেশের মানুষকে ইসলামের প্রকৃত মর্মের প্রিতি উৎসাহিত করবে।
তিনি বলেন, তাঁকে বেশ কয়েকবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল এবং তিনি সর্বশক্তিমান আল্লাহর রহমতে বেঁচে গেছেন।
হজ পালনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ১৯৮৪ সালে প্রথম হজ করেন এবং পরে তিনি তার পিতা বঙ্গবন্ধু ও মা বঙ্গমাতার পক্ষ থেকেও হজ করেন।
এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, তিনি জেদ্দায় অনুষ্ঠিতব্য ওআইসির নারী বিষয়ক সম্মেলনে যোগ দেবেন এবং মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর পবিত্র রওজা মোবারকের জিয়ারত করবেন।
জবাবে শেখ ড. আবদুল্লাহ বিন আবদুর রহমান আল-বুয়াজান বলেন, তিনি মদিনার পবিত্র মসজিদে নববীতে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানানোর প্রতীক্ষায় থাকবেন।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এমপি, ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, অ্যাম্বাসেডর-এ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, ধর্ম বিষয়ক সচিব মো. এ হামিদ জমাদ্দার এবং সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা ইউসুফ ইসা আল দুহাইল উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গ্লোবাল সেন্টার অন এ্যাডাপশন (জিসিএ) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অথ্যাপক ড. প্যাট্রিক ভি ভারকুইজেন একই স্থানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
প্রেস সচিব জানান, প্যাট্রিক ভি ভারকুইজেন আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে জলবায়ু ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ সময় তিনি ভাসমান পানির গাড়ির মতো দেখতে নেদারল্যান্ডস হেড কোয়ার্টার অফিসের মডেল দেখান এবং প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে একটি কনভেনশন সেন্টার নির্মাণের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
জিসিএ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে এ পর্যন্ত প্রায় ৩২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করা হয়েছে।
জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে উপকূলীয় অঞ্চলে সবুজ বেল্ট তৈরি করতে কাজ করছে, অন্যদিকে তার দল আওয়ামী লীগ ১৯৮৫ সাল থেকে বনায়নের জন্য চারা রোপণ করে আসছে।
এ্যাম্বাসেডর এ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, ক্লাইমেট ভালরারেবল ফোরামের প্রেসিডেন্সির বিশেষ দূত আবুল কালাম আজাদ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাউদ্দিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র : বাসস
এফআর/অননিউজ