গণঅধিকার পরিষদের জন্য ফান্ড কালেকশনের নামে প্রবাসীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থসহ দামি উপঢৌকন আদায় ও আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সংগঠনটির নেতা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেন নুর। সেসব দেশে গণঅধিকার পরিষদের শাখা কমিটি গঠনও করেন। কাতার ভ্রমণকালে ‘কাতার প্রবাসী অধিকার পরিষদ’ এর কমিটি গঠন করেছেন নুর। এ সময় তার বিরুদ্ধে গাড়ি নিয়ে কাতার প্রবাসী অধিকার পরিষদের সভাপতির পদ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভাইরাল হওয়া এই ভিডিওতে দেখা যায়, কাতার প্রবাসী অধিকার পরিষদের এক অনুষ্ঠানে নুরুল হক নুরকে সভাপতি করা হয়েছে। সেখানে উপস্থিত শফিকুল নামে এক প্রবাসী নুরুল হক নুরকে গাড়ি উপহার দেয়ার ঘোষণা দিচ্ছেন। এ ছাড়া তিনি সারা বাংলাদেশে নুরকে ভ্রমণে সহায়তা করার আহ্বান জানাচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাবেক ভিপি নুর বিভিন্ন দেশে গিয়ে প্রবাসীদের নিয়ে ‘প্রবাসী অধিকার পরিষদ’ এর ব্যানারে গণঅধিকার পরিষদের শাখা কমিটি গঠন করছেন। আর এসব কমিটির পদ পেতে সেসব দেশের প্রবাসীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থসহ বিভিন্ন দামি উপঢৌকনও নিচ্ছেন। কাতারেও প্রবাসী শফিকুলকে সভাপতি পদের বিনিময়ে তিনি গাড়ি নিয়েছেন।
নুরের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নতুন নয়। বিভিন্ন সময়ে তার বিরুদ্ধে অর্থ-ধর্ষণ কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে।
বিশেষ করে ওমরাহ পালনের কথা বলে দুবাই গিয়ে ইসরাইলের লিকুদ পার্টির সদস্য মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে গোপন বৈঠকের ছবি ফাঁস হলে বিতর্কের ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। নেটিজেনরা প্রশ্ন তোলেন- ‘ভিপি নুর পবিত্র ওমরাহ পালনের কথা বলে বিদেশ ঘুরে বিভিন্ন ইসলাম বিরোধী গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্টদের সঙ্গে কি দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছেন?’
এ ছবিকে কেন্দ্র করে শুরু হয় নাটকিয় পরিস্থির। বিতর্কিত এই ছবিকে প্রথমে এডিট বলে দাবি করেন নুর। পরে চাপের মুখে স্বীকার করেন মেন্দির সাথে বৈঠক করার ঘটনা।
এছারাও ইজরায়েলি গুপ্তচরের সাথে আতাতের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর পক্ষেও কথা বলেন নূর।
ইসলাম বিরোধী শক্তির সাথে আতাতের পর দেশে ফিরে আবারো জামাতের ধর্মীয় রাজনীতির সমর্থনে নানা কথা বলা শুরু করেন তিনি। ফিলিস্তিনে হামলার ঘটনায় ইসরায়েল বিরোধী নানা বক্তব্য রাখলেও। সমমনা দলের নেতা নুরুল হক নুরের ইসরায়েলি কানেকশনের বিরুদ্ধে কোন কথাই বলেননি জামাত বিএনপির নেতারা। জানাননি কোন আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদও।
এমন সব বিতর্ক প্রসঙ্গে অনেকে বলছেন মুখে আদর্শের বুলি আওরালেও নুর মূলত রাজনৈতিক পরিচয়কে ব্যাবহার করে বিত্তশালী হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ বলছেন দেশপ্রেম নয় বরং নিজের স্বার্থরক্ষাই নুরের প্রধান লক্ষ্য।
সেই সাথে ইসলামের কথা বলে সভা সমাবেশ গরম করা নুরের ইজরায়েলি কানেকশন প্রমান হওয়ার বিষয়টি তার দ্বিমুখী চরিত্রের প্রতিচ্ছবি বলেও মন্তব্য করছেন মেটিজেনরা।
সর্বশেষ প্রবাসী কমিটি গঠনের নামে পদবানিজ্য ও চাঁদাবাজির প্রমাণ ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় আবারো নুরকে ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্কের ঝড়।
ফরহাদ/অননিউজ