প্রশাসনের আশ্বাসে ২৩ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন পাঁচ দফা দাবিতে অনশনরত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) সাত শিক্ষার্থী। আজ সোমবার (২০ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৩টার পর তাদের পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান। এবং পাঁচ দফা দাবি থেকে ৪টি দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জানা যায়, প্রক্টরের অপসারণসহ পাঁচ দফা দাবিতে টানা ১০দিন শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পর কোনো ফলাফল না পাওয়ায় গত রবিবার বিকেল ৪ টায় অনশনে শুরু করেন সাময়িক বহিষ্কার হওয়া লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী এনায়েত উল্লাহ, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী সালমান চৌধুরী হৃদয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ শাহরিয়া ও কাজল হোসাইন। পরে রাত ৮ টায় কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান পলাশ তাদের সাথে যোগ দেন। দাবী আদায় না হওয়ায় সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টায় ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী লাবিবা ইসলাম এবং দুপুর একটায় মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী রবি দাস অনশন শুরু করেন।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমাদের আন্তরিকতার কোন অভাব নাই। তোমরা তোমাদের শিক্ষা জীবনে ফিরে যাও। আমরা তোমাদের সাথে আছি তোমাদের আমাদের মিলে এই বিশ্ববিদ্যালয়। আমরা তোমাদের পুরো নিশ্চয়তা দেওয়ার পরেই তোমরা অনশন ভেঙেছ এটা ধরে নিচ্ছি। এই আন্দোলন শেষ, এখান থেকে চলে যাবা তারপর যদি কোন ঘটনা ঘটে তাহলে আমরা ব্যবস্থা নিবো।’ আন্দোলনের মুখপাত্র রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আমাদের আন্দোলন শীতিল করেছি। আমাদের ৫টা দাবির মধ্যে ৪টা দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। প্রক্টরের বিরুদ্ধে যদি যথাযথ প্রমান দিতে পারি তাহলে ব্যাবস্থা নিবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। যদি প্রয়োজন পড়ে তাহলে আমরা আবার আন্দোলনের দিকে যাবো।’
সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ‘নিরাপত্তা নিশ্চিতে সবাইকে আইডি কার্ড নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে হবে। আর অছাত্র এবং অবৈধ কেউ হলে থাকতে পারবে না। যে দুইজন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার দেওয়া হয়ছে সেটা স্থগিত থাকবে। এটা নিয়ে আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তাদের রিপোর্ট অনুসারে সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর প্রক্টরের বিরুদ্ধে যথাযথ প্রমাণ দিতে পারলে আমরা ব্যবস্থা নিব।’
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনায় ‘দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীর অপসারণ’, ‘চিহ্নিত আসামীদের গ্রেফতার এবং বিচার’, ‘বহিরাগত, অছাত্র এবং সন্ত্রাসীদের হলে কিংবা ক্যাম্পাসে প্রবেশে আজীবন নিষেধাজ্ঞা’, ‘দুই শিক্ষার্থীর অযাচিত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার’ এবং ‘নিরাপদ ক্যাম্পাস সুনিশ্চিত করা’ দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন তারা।
শান্ত/অননিউজ