বেকার প্রেমিক । তাই সম্পর্ক মেনে নিতে নারাজ মেয়ের বাবা-মা। সাফ জানিয়েছেন, বিয়ে দেবেন না বেকার ছেলের সঙ্গে। এরপর সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে এই যুগল করল অপহরণের পরিকল্পনা। প্রেমিকার বোনকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ চাওয়া হয় ৫০ লাখ, রফা হয় চব্বিশে। এমনি এক সিনেমাটিক ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লা তিতাস উপজেলার কেশবপুর গ্রামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক প্রণব আচার্য্য।
তরুণ-তরুণীর পরিকল্পনা ছিল মুক্তিপণের টাকা দিয়ে যাবেন ইউরোপে। সেখানে আর কোনো বাধা থাকবে না। টাকা আদায়ে সফল না হলেও প্রেমকে পরিণতিতে নিয়ে যেতে পেরেছে এই যুগল। এই কাণ্ডের পর বিয়েতে রাজি হয়েছে মেয়ের পরিবার।
তদন্ত কর্মকর্তা প্রণব আচার্য্য জানান, গত ১ আগস্ট সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কেশবপুর গ্রামের মাইনুদ্দিনের ছোট মেয়ে মুনিরা আক্তার জান্নাত নিখোঁজ হন। পরদিন তিতাস থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন বাবা।
মাইনুদ্দিন একসময় প্রবাসে ছিলেন। দেশে এসে কৃষি কাজ শুরু করেন। তার দুই মেয়ে, দুই ছেলে। নিখোঁজ হওয়া মুনিরা দ্বিতীয় সন্তান।
মুনিরার বড় বোন মাসরাফি আক্তার মুন্নি। তার সঙ্গে কয়েক বছর ধরে প্রেমের সর্ম্পক ছিল খালাত ভাই রকিবুল ইসলামের। তবে এই সম্পর্ক মেনে নেননি মুন্নির বাবা-মা। সাফ জানিয়ে দেন, ছেলে প্রতিষ্ঠিত হলেই কেবল বিয়ে হতে পারে।
মাইনুদ্দিনের ডায়েরির পর মাঠে নামে তিতাস থানার পুলিশ।
এ সময় মুনিরার পরিবারকে মোবাইলে ফোনে জানানো হয়, ৫০ লাখ টাকা হলে মেয়েটিকে জীবিত ফেরত দেয়া হবে। পরে প্রায় অর্ধেক টাকায় রফা হয়।
মুনিরাকে উদ্ধার করতে তিতাস থানার পুলিশের সঙ্গে যোগ দেয় গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। প্রযুক্তির সহয়তায় তারা জানতে পারে রাকিবুল ইসলাম এ ঘটনায় জড়িত। পরে তার মায়ের সহযোগিতায় রোববার গভীর রাতে মুনিরাকে উদ্ধার করে পুলিশ।
তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুধীন চন্দ্র দাস বলেন, ‘অপহরণের ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় এবং মুনিরা উদ্ধার হওয়ায় দুই পরিবার মিলে সিদ্ধান্ত নেয় তারা মাসরাফি আক্তার মুন্নি ও রাকিবুল ইসলাম আপনকে সামাজিকভাবে বিয়ে দেবে। তাই এই ঘটনায় আর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না।’