ফরিদপুরের কে এই শীর্ষ প্রতারক সাঈদ আলী নান্নু- এমনি প্রশ্ন ভাসছে জেলা সাংবাদিক সহ বিভিন্ন মহলে। যার প্রতারণার শিকার হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকাসহ জেলার স্থানীয় সাংবাদিক ও বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি ও জনসাধারন- এমনি বিস্তর অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনা প্রকাশে জানা গেছে, এই সাঈদ আলী দীর্ঘদিন ধরে নিরবে নিরবে বিভিন্ন নামে-বেনামে প্রতারণা করে আসছেন। জেলা বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে হুমকি-ধমকি দিয়ে বিশেষ সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করেন। এমনি একটি ঘটনার আলোকে এই সাঈদ আলী নান্নু একজন প্রতারক হিসেবে ফরিদপুর জেলার সাংবাদিক মহলের এখন পরিচিত।
তার বাড়ি ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট মোল্লা বাড়ি সড়কে এবং স্থানীয় একটি পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক। যে পত্রিকার পরিচয়ে এই প্রতারণা করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যে পত্রিকাটি ‘দৈনিক ফরিদপুর’ নামে এবং অনিয়মিত এবং যার প্রচার সংখ্যা ১০ থেকে ১৫ কপি। ফরিদপুরের অন্তত ১০/১২ জন হকার জানায় তার পত্রিকা দেখেন নাই এবং চিনেন না। এই পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে প্রচার না করে বিজ্ঞাপনের বিল তুলে নিচ্ছে। তাতে ক্ষতি হচ্ছে সরকারি রাজস্ব এবং প্রতারণার শিকার হচ্ছে জনসাধারন। অপরদিকে কিছু সরকারি অফিসে হুমকি দিয়ে বলে বেড়ায়- তার পত্রিকা ডিএফপিভূক্ত, বিজ্ঞাপন না দিলে তাদের চাকুরি থাকবে না।
অন্য দিকে গত ১লা সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং তারিখে ফরিদপুর বিভাগীয় প্রেসক্লাব নামের একটি প্যাডে শেখ আশরাফ উদ্দিন ও উপদেষ্টা পদ লিখে নির্বাহী প্রকৌশলী, এলজিইডি ফরিদপুর বরাবর একটি ভুয়া চিঠি লিখে বেআইনীভাবে হুমকি দেয় এই প্রতারক।
ঘটনাটি জানাজানি হলে শেখ আশরাফ উদ্দিন নামে ওই ব্যক্তি প্রতিবাদ জানিয়ে এই প্রতারকের বিচারের দাবিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং তারিখে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এলজিডি নির্বাহী প্রকৌশলীর বরাবর। এভাবে এই সাঈদ আলী নান্নু জেলার বিভিন্ন অফিসে নামে বেনামে ফোন করে ও হুমকি দিয়ে থাকেন বলে জানা যায়।
শুধু এখানেই শেষ না, সে দেশের বিভিন্ন জাতীয় ‘দৈনিক খবর’ পত্রিকা নিজের গোপন জায়গা থেকে ছাপিয়ে নিজের নামে ব্যাংক একাউন্ট করে বিল তুলে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিগত দিনে এমন ঘটনায় ধরা খেয়ে সেই বিলের টাকা ফেরত দিয়ে অপমানের শিকার হয়েছেনও এবং সেই আলোচিত ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে ও প্রকাশ পেলেও থেমে নেই প্রতারক সাইদ আলী নান্নু।
জানা যায়, কিছু অসাধু অফিস সহকারি ও ব্যাংক কর্মচারির যোগসাজসে এই সব অপকর্ম করে থাকেন এই সাইদ আলী নান্নু। যা গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করলেও বেরিয়ে আসবে সত্য ঘটনা।
এ বিষয়ে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক মাহবুবুল ইসলাম পিকুল জানায়, ‘ফরিদপুর জেলায় এই সাঈদ আলী নান্নু সহ যারাই সাংবাদিকতার নামে ভুয়া প্রেসক্লাব সৃষ্টি করে প্রতারনা করছে, আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে প্রশাসনকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করছি।’
এ বিষয়ে সাঈদ আলী নান্নুর সাথে কথা বলতে বার বার তার মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বৃহত্তর ফরিদপুর সংবাদপত্র সম্পাদক পরিষদের সভাপতি আশিষ পোদ্দার বিমান বলেন, ‘এই সাইদ আলী নান্নু ফরিদপুরের তার স্থানীয় গুপছি পত্রিকা ও ঢাকার গুপছি পত্রিকা দিয়ে বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে সংবাদপত্রের মান ধ্বংস করে দিল। এতে জনসাধারন প্রতারণার শিকার হচ্ছে এবং সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যেসব পত্রিকা কোন পাঠক বা হকার পায়না। কিছু অসাধু অফিস সহকারিদের ম্যানেজ করে সে ফরিদপুর বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা করে পার পাচ্ছে। তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করছি।