ফেনীতে ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণে কলেজ ছাত্র নিহতের ঘটনায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের ও সাবেক স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল, নিজাম হাজারী ও মাসুদ সহ আ’লীগের ৬৬২জনের বিরুদ্ধে মামলা
জাবেদ হোসাইন মামুন, সোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি।।
ফেনী শহরের মহিপালে ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবর্ষণে কলেজ ছাত্র মাহবুবুল হাসান মাসুম নিহতের ঘটনায় ফেনী মডেল থানায় মামলা হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ওয়ান ইলেভেনের খল নায়ক সাবেক এমপি মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী সহ ১৬২জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৪০০-৫০০জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ৪ সেপ্টেম্বব বুধবার মামলাটি দায়ের করেছেন নিহতের ভাই মাহমুদুল হাসান। উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে ৫ উপজেলা চেয়ারম্যান ৫ মেয়র সহ কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান রয়েছেন।
অপর আসামিদের মধ্যে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগ সভাপতি দিদারুল কবির রতন, ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক হারুন মজুমদার, ছাঘলনাইয়া আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ছনুয়া ইউপি চেয়ারম্যান করিম উল্লাহ বি কম, ছাগলনাইয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. মোস্তফা, সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন, পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রশিদ মিলন, শর্শদী ইউপি চেয়ারম্যান জানে আলম ভূঞা, ফাজিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুল হক রিপন, পাঁচগাছিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক লিটন, ধলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার আহমেদ মুন্সী, লেমুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ উদ্দিন নাসিম, ধর্মপুর ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সাকা, কাজিরবাগ ইউপি চেয়ারম্যান কাজী বুলবুল আহমেদ সোহাগ, কালিদহ ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ডালিম, মোটবী ইউপি চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ, মাতুভূঞা ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মামুন, সোনাগাজীর মঙ্গলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন বাদল, পৌরসভার কাউন্সিলর জয়নাল আবদীন লিটন হাজারী, আশরাফুল আলম গীটার, লুৎফুর রহমান খোকন হাজারী, আমির হোসেন বাহার, কহিনুর আলম রানা, গোলাম মেহেদী আলম চৌধুরী রুবেল, হারুন উর রশিদ মজুমদার, বাহার উদ্দিন বাহার, আবুল কালাম, সাহাব উদ্দিন, সাবেক কাউন্সিলর মজিবুর রহমান ভূঞা, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সদস্য আবদুল জলিল আদর, জেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জিয়াউল আলম মিস্টার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শরীফ উল্লাহ, সহ-সম্পাদক হুমায়ুন কবীর, সদর উপজেলা সভাপতি নুরুল আবছারে আপন, পৌর যুগ্ম-সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পিটু, রেজাউল করিম নাদিম, সহ-সম্পাদক আবুল কালাম সোহেল, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম মোহন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি জিয়াউদ্দিন বাবলু, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল আহমেদ তপু, সাধারণ সম্পাদক নুর করিম জাবেদ, যুগ্ম-সম্পাদক রাকিব অর্ণব, পৌরসভার সাবেক সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত রাজু, সদর উপজেলার সাবেক সভাপতি ফখরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আবদুস শুক্কুর মানিক, সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল ফিরোজ, জেলা তাঁতী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ওমর এলাহী সুমন, ধলিয়া ইউনিয়ণ যুবলীগের সহ-সভাপতি নুরুল আলম বাদশা, পাঁচগাছিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ডালিম, স্থানীয় যুবলীগ নেতা সরোয়ার হোসেন রতন, হায়দার হোসেন পিংকু, মতিগঞ্জ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান রবিউজ্জামান বাবু, (সাবেক এমপি নাসিমের ছোট ভাই) জালাল উদ্দিন চৌধুরী পাপ্পু, শর্শদী ইউনিয়নের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম সম্রাট, মহিপালের ছাত্রলীগ নেতা নাহিয়ান চৌধুরীর নাম রয়েছে।
এজাহরে মাহমুদুল হাসান মাসুম উল্লেখ করেন ৪ আগস্ট ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহিপাল ফ্লাইওভারের নিচে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ কর্মসূচিতে তার ভাই মাহবুবুল হাসান মাসুম অংশ নেয়। ওই দিন দুপুর দেড়টার দিকে মহিপাল ফ্লাইওভারের নীচে প্রধান আসামি সহ ৬নাম্বার আসামিদের ইন্ধনে বাকী আসামিরা ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণ করেন। সেখানে মাসুম গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়লে তাকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে চমেকে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। ফেনী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রুহুল আমিন হত্যা মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। উল্লেখ্য, ৪ আগস্ট মহিপালে গুলিবর্ষণের ঘটনায় ১১ জন নিহত হয়। এদের মধ্যে সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের চরচান্দিয়া গ্রামের হাফেজ নোমানের ছেলে মাহবুবুল হাসান মাসুম গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। ৭ আগস্ট বিকাল তিনটায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। ওই দিনের ঘটনায় এটি সহ ৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।