ফেনীর মহিপালে ছাত্রলীগ-যুবলীগের গুলিতে আহত কলেজ ছাত্র মাহবুবুল হাসান মাসুম (২৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন।
বুধবার ৭ আগস্ট বিকাল ৫টায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় দু'দফা নামাজে জানাজা শেষে গ্রামের বাড়ি চরচান্দিয়া ইউনিয়নে তাকে পারিবারিক কবরাস্থানে দাফন করা হয়েছে।
নিহতের বড় ভাই মাহফুজুল হাসান জানান, চট্টগ্রাম কলেজে মাস্টার্সের ছাত্র ছিলেন মাসুম। চার ভাই তিন বোনের মধ্যে সে ছিল চতুর্থ। গত রোববার ৪ আগস্ট সকাল থেকে ফেনীতে বৈষম্য বিরোধী কোটা আন্দোলনের ছাত্রজনতার মিছিলে জাতীয় পতাকা বুকে জড়িয়ে মাছিল সমাবেশে অংশ নেন মাসুম। দুপুর একটার দিকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মীদের এলোপাথাড়ি গুলিতে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মাসুম। উপস্থিত লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ফেনী জেনারেল হাসাতালে ভর্তি করে। সেখানে থেকে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। ময়না তদন্ত শেষে বুধবার রাতে অ্যাম্বুলেন্সযোগে তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। আত্মীয়স্বজনরা হাইমাউ করে কাঁদতে থাকেন। সকাল নয়টায় সোনাগাজী মোহাম্মদ ছাবের সরকারি পাইলট হাইস্কুল মাঠে তার প্রথম নামাজে জানাজা। দ্বিতীয় জানাজা চরচান্দিয়া ছোবহানিয়া মসজিদের সামনে শেষ করে তাকে পারিবারিক কবরাস্থানে দাফন করা হয়।
সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের মধ্যম চরচান্দিয়া গ্রামের মৃত হাফেজ নোমান হাসানের ছেলে মাসুম। ছোট বেলা থেকে মেধাবি ছাত্র ছিল সে। সোনাগাজী ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা থেকে ২০১৪সালে দাখিল, চট্টগ্রাম আলিয়া মাদরাসা থেকে ২০১৬ সালে আলিম পাস করেন। ছাগলনাইয়া আলহাজ্ব আবদুল হক চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ থেকে বাংলা বিভাগে স্নাতক পাস করে চট্টগ্রাম কলেজে মাস্টার্সে ভর্তি হন। স্থানীয়ভাবে ইসলামি শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। এমন একজন মেধাবি ছাত্র ও বিশ্বস্ত একজন কর্মী হারিয়ে ইসলামি আন্দোলনের নেতারাও হয়ে পড়েছেন হতবিহবল।
শোকাহত পরিবারকে শান্তনা দিতে জেলা ও উপজেলা নেতারা ছুটে যান মাসুমের বাড়িতে। কবর জিয়ারত ও দোয়া মাহফিলে শরীক হন তারা।
এফআর/অননিউজ