ফেনীর সোনাগাজীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক নারী সেনা কর্মকর্তা, তার ভগ্নিপতি পুলিশ কর্মকর্তার অত্যাচার, নির্যাতন ও প্রাণ নাশের হুমকি থেকে বাঁচতে জহির উদ্দিন মাহমুদ নামে এক ব্যবসায়ী সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তিনি সোনাগাজী উপজেলার চরগণেশ গ্রামের বাসিন্দা ও সোনাগাজী বাজারের বাসিন্দা।
বুধবার দুপুরে ফেনী শহরের ক্রাউনওয়েস্ট রেস্টুরেন্টে তিনি জনাকীর্ণ এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন ডা. সুরাইয়া পারভীন লে. কর্ণেল হিসেবে সেনাবাহিনীর সিএমইচএ এবং তার ভগ্নি পতি ইউছুপ আলী চৌধূরী ডিএমপির পল্টন থানার অধীনে গুলিস্তান আহাদ আলী পুলিশ বক্সের পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, দুই কর্মকর্তার নিকটাত্মীয় নাসির উদ্দিন হায়দার ও জসিম উদ্দিন হায়দারের স্ত্রী মাহফুজা আরজুর কাছ থেকে চলতি বছরের ১০মে সোনাগাজী পৌরসভার চচরচান্দিয়া মৌজায় সাড়ে দশ শতক জমি ক্রয় করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে ভোগ দখলে রয়েছেন। কিন্তু গত..ডা. সুরাইয়া পারভীনের নেতৃত্বে ৬-৭জনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী তার সীমানা প্রাচীর ভেঙে ফেলেন। তিনি বাধা দিলে তার ওপর হামলার চেষ্টা চালিয়ে হত্যার হুমকি দেন।
বিএস ও জমাখারিজ খতিয়ানও নাসির উদ্দিন হায়দার ও জসিম উদ্দিন হায়দার গংয়ের নামে প্রচারিত হয়েছে। তিনি জমিটি কেনার পর তার নামে জমাখারিজ খতিয়ান প্রচারিত হয়েছে। কিন্তু সেনা কর্মকর্তা স্বদলবলে ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্যবসায়ী জহির উদ্দিন মাহমুদের নির্মাণ করা সীমানা প্রাচীর নিজ হাতে হাতুড়ি দিয়ে ভাঙচুর করেন। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী জহির থানায় মামলা করতে চাইলে পুলিশ মামলা না নিলে তিনি গত ১৬মে আদালতে সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তা সহ ৭জনকে বিবাদী করে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন। বর্তমানে মটমলাটি সিআইডিতে তদন্তাধীন রয়েছে। মামলা করায় ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশ ও সেনাকর্মকর্তা ব্যবসায়ী জহির ও তার স্বাক্ষীদের প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
পুলিশ কর্মকর্তার হুমকির একটি অডিও এবং সেনাকর্মকর্তার ভাঙচুরের একটি ভিডিও রেকর্ডিং তার কাছে রক্ষিত আছে। এসময় তিনি সাংবাদিকদের সামনে ভিডিও এবং অডিও রেকর্ডিং দুটি উপস্থাপন করেন। তিনি আরো অভিযোগ করেন সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তা নিজেদেরকে সরকারি কর্মকর্তা দাবি করে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অনৈতিক হস্তক্ষেপ চালিয়ে মামলার তদন্তকর্মকর্তাকে প্রভাবিত করছেন। যার ফলে তিনি ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে গভীর সংশয় প্রকাশ করেছেন। তাই তিনি ন্যায় বিচার পেতে সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা, সেনা প্রধান আইজিপির সহযোগিতা কামনা করেন। অন্যথায় তিনি তার সন্তান ও স্বাক্ষীদের জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ এবং উৎকন্ঠার মধ্যে বাঁচতে হবে বলে আশঙ্কা করেছেন। তিনি জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ১০সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সোনাগাজী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
তিনি আরো বলেন, জমিটির মালিকানার স্বপক্ষে ওই কর্মকর্তারা কাগজপত্র দেখাতে পারলে তিনি স্বেচ্ছায় মালিকানা ও দখল ছেড়ে দেবেন। থানায় ও স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সমঝোতা বৈঠক বসলেও মালিকানার স্বপক্ষে কোন কাগজপত্র উপস্থাপন করতে না পেরে দুই কর্মকতা ক্ষমতার দাপটে তার জানমালের ক্ষতিসাধন করে সংশ্লিষ্ট জমি জবরদখলের পাঁয়তারা করছেন। তিনি প্রতিকার চেয়ে ওই কর্মকর্তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত আবেদনেরও প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।