ফেয়ার হসপিটাল’ ভাঙচুর ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ
হুমায়ুন কবির মানিক, কুমিল্লা প্রতিনিধি।
কুমিল্লার বরুড়া বাজারের বেসরকারি চিকিৎসালয় ফেয়ার হসপিটালের চিকিৎসক ও প্রাক্তণ নির্বাহী পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে ওই হাসপাতাল ভাঙচুর, পরিচালকদেরকে মারধর ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে ডা. ইকবাল ও তার সহযোগীদেরকে অভিযুক্ত করে বরুড়া থানায় পৃথক পৃথক ভাবে তিনটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ডা. মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন নোয়াখালীর চৌমুহনী পৌরসভার মিরওয়ারিশপুরে অবস্থিত আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্তরত আছেন। সরকারি চাকরিজীবি হওয়া স্বত্তেও তিনি একাধিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় কুমিল্লার বরুড়া বাজারে অবস্থিত ফেয়ার হসপিটালে মোটা অংকে বেতনভুক্ত হয়ে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত ফেয়ার হসপিটাল কর্তৃপক্ষের সাধারণ সভায় হাসপাতালের চিকিৎসক ও প্রাক্তণ নির্বাহী পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনের কাছে রক্ষিত ত্রিশ লাখ টাকার হিসাব চান পরিচালনা কমিটির সদস্যরা। এ নিয়ে ডা. ইকবাল ও পরিচালকদের মাঝে বাকবিতন্ডা হয়। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালেহ উদ্দিনকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করে ডা. ইকবাল। এসময় পরিচালনা কমিটির সদস্যরা বাধা দিলে ডা. ইকবাল ও তার সহেযাগীরা হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুরের পর হাসপাতালের ক্যাশ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার ড্রয়ারে থাকা নগদ অর্থ লুট করে এবং হাসপাতালের কম্পিউটার ও সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুর করে। এ বিষয়ে ফেয়ার হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সালেহ উদ্দিন ভূঁইয়া, অর্থপরিচালকের ছেলে ডা. কাজী শিহাব উদ্দিন এবং ভুক্তভোগী জান্নাতুল ফেরদৌসের পিতা মোঃ সাহেব আলী বাদি হয়ে বরুড়া থানায় পৃথক পৃথক ভাবে তিনটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ফেয়ার হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সালেহ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘ডা. ইকবাল আমাদের হাসপাতালের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন। এ সুবাদে তার কাছে হাসপাতালের ত্রিশ লাখ টাকা রয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মিটিং-এ আমরা তার কাছে ওই টাকার হিসাব চাইলে তিনি হিসাব দেখাতে ব্যর্থ হয়ে তার সহযোগীদেরকে সঙ্গে নিয়ে আমাদেরকে মারধর করেন, হাসপাতালের বিভিন্ন কক্ষ ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন এবং হাসপাতালের ক্যাশ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার ড্রয়ার থেকে আড়াই লাখ টাকা লুট করেন। এমনকি সন্ত্রাসী তান্ডড ও লুটপাটের প্রমাণ লোপাটের জন্য হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরা ও কম্পিউটারও ভাঙচুর করেছেন। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডা. মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। স্থানীয় দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে স্বল্প খরচে আধুনিক চিকিৎসাসেবা দেয়ার লক্ষ্যে আমি যে প্রতিষ্ঠানটি তিল তিল করে গড়ে তুলেছি। তা কেন ভাঙতে যাবো? আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যই আমার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
বরুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন,পৃথক পৃথক তিনটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ24।।