বঙ্গবন্ধুর যুগান্তকারী অর্জন নিয়ে গবেষণার ফল প্রকাশ

অনলাইন ডেস্ক।।

মাথাপিছু আয়ে বঙ্গবন্ধুর যুগান্তকারী অর্জন নিয়ে গবেষণা ফলাফল প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটি। ১ সেপ্টেম্বর রাতে তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটি আয়োজিত ‘মাথাপিছু আয়ে বঙ্গবন্ধু সরকারের যুগান্তকারী সাফল্য: গবেষণা ফলাফল প্রকাশনা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে গবেষণা ফলাফল তুলে ধরা হয়।

আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ নয় পৃষ্ঠার ওই গবেষণাপত্র তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রাহমানের সভাপতিত্বে গবেষণা ফলাফল প্রকাশনার সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। আলোচনা করেন অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জামান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রফেসর হেলাল উদ্দিন নিজামী, ইউএনডিপির কান্ট্রি ইকোনোমিস্ট ড. নাজনীন আহমেদ।

গবেষণাপত্রে বলা হয়, জাতির পিতার সুদৃঢ় নেতৃত্ব, অসীম সাহসিকতা ও কঠোর পরিশ্রমের কারণে যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলাদেশে মাত্র সাড়ে তিন বছরে আমাদের মাথাপিছু আয় প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছিল। ১৯৭২ সালে মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৯৪ মার্কিন ডলার। জাতির পিতা ১৯৭৫ সালে মাথাপিছু আয় ২৭৮ ডলারে উন্নীত করেছিলেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরে কোনো দেশের মাথাপিছু আয় তিন গুণবৃদ্ধি পাওয়ার নজীর পৃথিবীতে বিরল।

১৯৭৩ সালে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির হার ছিল ২৬.৬৮%। ১৯৭২ সালের ২৯.৩৩% ঋণাত্মক হার বিবেচনায় ১৯৭৩ সালে প্রকৃতপক্ষে এই বৃদ্ধির হার ছিল ৫৬.৬৮%। ১৯৭৪ সালে বৃদ্ধির হার ছিল ৫২.২৪% এবং ১৯৭৫ সালে বৃদ্ধির হার ছিল ৫২.৪৯%।

গবেষণাপত্রে দেখানো হয়, জাতির পিতার সরকারের ১৯৭৫ সালের ২৭৮ ডলার মাথাপিছু আয়ের বেঞ্চমার্ক ২০২১ সালের পূর্বে বাংলাদেশের কোনো সরকার অতিক্রম করতে পারেনি। গবেষণায় দেখানো হয়, জিয়াউর রহমান, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং খালেদা জিয়ার দুই মেয়াদে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয়ের প্রবৃদ্ধি ভারত ও পাকিস্তান থেকে কম ছিল। ২০২১ সালের পূর্বে একমাত্র জাতির পিতার মাথাপিছু আয় প্রবৃদ্ধি দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ ছিল।

গবেষণায় দেখানো হয়, জাতির পিতার সরকারের ১৯৭৫ সালের ২৭৮ ডলারের বেঞ্চমার্ক ছুঁতে পেরেছিলেন তারই কন্যা শেখ হাসিনা ২০২১ সালে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর উদযাপনের মধ্যে। ১৯৭৫ সালে মাথাপিছু আয়ের ভিত্তিতে জাতির পিতা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ অর্থনীতিতে পরিণত করেছিলেন। ২০২১ সালে তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আবার দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ অর্থনীতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

গবেষণায় দেখানো হয়, বাংলাদেশের ইতিহাসে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার একবারই ৯ শতাংশ অতিক্রম করেছিল, ১৯৭৪ সালে জাতির পিতার সরকারের সময়। ঐ বছর প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৯.৫৯%। জাতির পিতার পর বাংলাদেশের ইতিহাসে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৮ শতাংশ অতিক্রম করেছিল বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে, ২০১৯ সালে। ঐ বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৮.১৫%।

খালেদা জিয়ার প্রথম মেয়াদ শেষে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ৩২৯ ডলার। এটি তার প্রথম মেয়াদের সর্বোচ্চ মাথাপিছু আয় ছিল। খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় মেয়াদ শেষে ২০০৬ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ৫১০ ডলার। এটি তার দ্বিতীয় মেয়াদের সর্বোচ্চ মাথাপিছু আয় ছিল। ১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধুর ২৭৮ ডলারের বেঞ্চমার্ক অনুযায়ী ২০০৬ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় থাকা উচিত ছিল ১০৫৪ ডলার। এরসঙ্গে বঙ্গবন্ধু সরকারের মাথাপিছু আয়ের বৃদ্ধির হারের (৫৩.৮০%) দশ ভাগের এক ভাগ অর্থাৎ ৫% বৃদ্ধির হার ধরলে ২০০৬ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় থাকা উচিত ছিল ১৪৮৫ ডলার। বঙ্গবন্ধুর মাথাপিছু আয়ের বেঞ্চমার্ক থেকে খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় সরকারের মাথাপিছু আয় ৯৭৫ ডলার কম ছিল।

সাইফ/অননিউজ টুয়েন্টিফোর

আরো দেখুনঃ