বিয়ে করতে বর এলেন ঘোড়ায় চেপে, আর বনবধূকে নিয়ে এলেন পালকিতে করে। আর সেই বিয়ের
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি স্থানীয় সংসদ সদস্য এসেছেন হেলিকপ্টারে চড়ে। শনিবার
ব্যতিক্রম এই আয়োজনটি করা হয়েছিল রাজশাহীর বাগমারার সোনাডাঙ্গা ইউপির চেয়ারম্যান
অধ্যক্ষ আহজাহারুল হকের এক মাত্র মেয়ে জান্নাতুন ফেরদৌস আঁখির বিয়ে উপলক্ষ্যে। ব্যতিক্রমী
এই বিয়ের আয়োজন দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার নারী-পুরুষ ভিড় জমায় কনের
বাড়িতে।
জানা গেছে, সোনাডাঙ্গা ইউনিয়নের ভরট্রগ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল মান্নান ও স্বাস্থ্য
কর্মী হালিমা খাতুনের এক মাত্র ছেলে মতিউর রহমানের সঙ্গে এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও
ইউনিয়নের আ.লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আজাহারুল হকের এক মাত্র মেয়ে জান্নাতুন ফেরদৌস
আঁখির পারিবারিকভাবে বিয়ে ঠিক হয়। বর মতিউর রহমান চীন থেকে পড়াশোনা শেষ করে দেশে
এসেছেন। কনে আঁখি বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রী। দুই পরিবারের সম্মতিতে শনিবার তাদের বিয়ের
দিন নির্ধারণ করা হয়।
এদিকে বিয়ের কয়েক দিন আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে মতিউর রহমানের পরিবার। নববধূকে
আনার জন্য গ্রামের এক প্রবীণ কাঠমিস্ত্রি তিন দিন ধরে একটি পালকি তৈরি করেন। এতে
প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকা ব্যায় হয়। পাশাপাশি বরকে কনের বাড়িতে নেওয়ার জন্য একদিনের জন্য
একটি ঘোড়াও ভাড়া করা হয়। দুপুরে ভরট্রগ্রাম থেকে ঘোড়ায় চড়ে বর মতিউর রহমান প্রায় দুই
কিলোমিটার দুরে কনের বাড়িতে যান। এ সময় প্রায় দেড়হাজার বরযাত্রী বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে পালকি
নিয়ে কনের বাড়িতে পৌঁছেন। গ্রামীণ পুরোনো রীতি অনুসরণে কনের পরিবারের পক্ষ থেকে
বরকে বরণ করে নেওয়া হয়।এদিকে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার নিয়ে
এসেছেন রাজশাহী-৪, বাগমারা আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী এনামুল হক। দুপুর ১ টার
দিকে সোনাডাঙ্গা ফুটবল মাঠে অবতরণ করে হেলিকপ্টারটি।
বর মতিউর রহমান যুগান্তরকে বলেন, তিনি চীনে পড়াশোনা করেছেন। সেখানে তিনি দেখেছেন
চীনের রীতি অনুযায়ী বর ও বরযাত্রীরা ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করতে যান কনের বাড়িতে। চীনের সেই
রীতি অনুসরণ করে তারও ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করতে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। তার সেই শখ পুরন করতে
তিনি ঘোড়ায় চড়ে কনের বাড়িতে যান, আর পালকিতে করে সন্ধ্যায় নববধূকে বাড়িতে নিয়ে
আসেন। ব্যতিক্রমী আয়োজনের মধ্যে দিয়ে বিয়ে সম্পন্ন হওয়ায় এবং পুরোনো রীতি অনুসরণ
করে পালকিতে চড়ে স্বামীর বাড়িতে নিরাপদে পৌঁছাতে পারায় কনে জান্নাতুন ফেরদৌস
আঁখিও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
এদিকে কনের বাবা ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আজাহারুল হক বলেছেন, তাঁর একমাত্র মেয়ের
বিয়েতে স্থানীয় সংসদ সদস্য, প্রশাসনের কর্মকর্তা ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার প্রায়
পাঁচ হাজার লোকজনকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। বর পক্ষের ব্যতিক্রমী আয়োজনে তিনিও মুগ্ধ।
শান্ত/অননিউজ