পাঁচ বছরের ছোট্ট শিশু রায়ান। উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কোর সেই শিশুটি ১০০ ফুট গভীর একটি কূপের মধ্যে পড়ে যায় গত মঙ্গলবার। এরপর থেকে তাকে উদ্ধারের আপ্রাণ চেষ্টা চালায় দেশটির উদ্ধারকর্মীরা। সবার ধারণা ছিল হয়ত বেঁচে ফিরবে ছোট্ট রায়ান। টানা পাঁচদিন উদ্ধারকর্মীদের আপ্রাণ চেষ্টাতেও বাঁচানো গেলো না শিশুটিকে। স্থানীয় সময় শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) শিশুটির নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়।
শিশু রায়ানের কূপে পড়ে যাওয়ার ঘটনা নাড়া দিয়েছে বিশ্ববাসীকে। অনেকে হ্যাশট্যাগও চালু করেন তার নামে। প্রার্থনা করারও আহ্বান জানান কেউ কেউ।
শনিবার রাতে যখন শিশুটিকে উদ্ধার করা হয় তখন তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য হেলিকপ্টার নিয়ে অপেক্ষা করা হচ্ছিল। কিন্তু জানা যায় শিশুটি আর বেঁচে নেই।
রয়্যাল প্যালেসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কূপের মধ্যে পড়ে যাওয়া শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু তাকে উদ্ধার করা হলেও ততক্ষণে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় মরক্কোর রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
কূপের মুখ খোলা থাকায় শিশুটি পড়ে গিয়েছিল বলে জানা গেছে। রায়ানের বাবা জানান, তিনি কূপটি মেরামত করছিলেন। এসময় ছেলে তার সঙ্গে ছিল। তিনি বলেন, রায়ান ঠিক আমার পাশেই ছিল। সে যে কখন পড়ে গেছে, বুঝতেই পারেননি।
খবর পেয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন উদ্ধারকর্মীরা। তবে বেশ বাধার মুখে পড়েন তারা। কূপের মুখ দিয়ে প্রবেশ করে শিশুটির কাছে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছিল না। কারণ, মাটিতে পাথর ও বালুর সংমিশ্রণ ছিল। সংকীর্ণ মুখে খোঁড়াখুঁড়ি বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিল। যেকোনো সময় মাটি ধসে আরও ভয়াবহ দুর্ঘটনার শঙ্কা ছিল। পরে ভিন্ন কৌশলে শিশুটিকে উদ্ধারের পথ বেছে নেন উদ্ধারকর্মীরা। কূপটির কাছে বুলডোজার দিয়ে খোঁড়া হয় নালা। সেটি ব্যবহার করে আড়াআড়িভাবে শিশুটির কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হয়। অবশেষে শনিবার সন্ধ্যায় তার কাছে পৌঁছতে সক্ষম হন উদ্ধারকর্মীরা। কিন্তু ততক্ষণে রায়ান আর বেঁচে নেই।
সূত্র: রয়টার্স, আল-জাজিরা