মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্বিগ্ন রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, মিয়ানমারে আরাকান আর্মি ও দেশটির সেনাবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। এতে শতাধিক রোহিঙ্গা নিহত এবং অনেকে আহত হয়েছেন বলে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) ভোর থেকে আরাকান প্রদেশের বুচিডংয়ে এই সংঘর্ষ শুরু হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, রোহিঙ্গারা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে মিয়ানমারের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ছুটছে। দেশটির সেনাবাহিনীর হামলার মুখে অসহায় এসব রোহিঙ্গারা বাংলাদেশেও প্রবেশের চেষ্টা করছে।
খবরে আরও জানা গেছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে আরাকান আর্মির সদস্যরা ফুমালি গ্রামে আশ্রয় নেয়। পরে সেখানে সেনাবাহিনীর ঘাঁটি থেকে আর্টিলারি গানসহ ভারী অস্ত্রের গোলা বর্ষণ করে। এতে শতাধিক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এ ছাড়া হামলার পর থেকে সেখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ রয়েছে।
অন্যদিকে রাখাইন রাজ্যের রামব্রী টাউনশিপে চলমান সংঘর্ষে মিয়ানমার বিমান বাহিনীর বোমারু বিমান বার বার শহরে উড়ছে। বিভিন্ন অবস্থানে গোলাবর্ষণ করছে।
সংবাদমাধ্যম ইরাবতী বলছে, গত বুধবার রাখাইনের একটি শহর নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় আরাকান আর্মি। এরপর আশপাশের গ্রামে তীব্র গোলাগুলি শুরু হয়।
ইরাবতী আরও বলছে, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) এর অ্যাম্বুলেন্সে করে আহত ৪১ জন রোহিঙ্গাকে মংডু হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। চিকিৎসা করার মতো অর্থও তাদের কাছে নেই। এরই মধ্যে হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় (আরআরআরসি) সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ শুরুর পর ২০১৮ সালে বাংলাদেশ মিয়ানমারের কাছে প্রত্যাবাসনে ৮ লাখ ৮২ হাজার রোহিঙ্গার একটি তালিকা দিয়েছিল। সেই তালিকা যাচাই-বাছাই করে মাত্র ৬৮ হাজার রোহিঙ্গার একটি তালিকা চূড়ান্ত করে তা বাংলাদেশের কাছে ফেরত পাঠিয়েছিল মিয়ানমার।
তবে কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্প ও ভাসানচর মিলিয়ে দেশে বর্তমানে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।