বাংলা বর্ণমালা অনুসারে প্রার্থীদের নাম থাকবে ব্যালটে

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলা বর্ণমালার ক্রমানুসারে ব্যালটে চূড়ান্ত প্রার্থীদের নাম রাখতে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আর সেই অনুযায়ী নামে পাশে থাকবে দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতীক। ইতোমধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের এভাবে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের পরের দিন থেকে প্রার্থীদের নামের তালিকা করে প্রতীক বরাদ্দের জন্য নির্দেশনা পাঠিয়েছে ভোট আয়োজনকারী এ সংস্থাটি।

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর অনুচ্ছেদ ১৬ এর দফা (৫) এবং নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮ এর বিধি ৭ অনুসারে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পরের দিন বিধিমালায় বর্ণিত “ফরম-৫” এ নির্ধারিত তালিকার ২নং কলামে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নাম বাংলা বর্ণমালার ক্রমানুসারে সাজিয়ে লিপিবদ্ধ করবেন এবং প্রত্যেকের নামের বিপরীতে ৩নং কলামে মনোনয়ন প্রদানকারী রাজনৈতিক দলের নাম বা স্বতন্ত্র উল্লেখপূর্বক ৪নং কলামে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পিতা/স্বামীর নাম, ৫নং কলামে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ঠিকানা এবং ৬নং কলামে বরাদ্দকৃত প্রতীক উল্লেখ করতে হবে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীগণের তালিকার নির্দিষ্ট স্থানে ভোটগ্রহণের দিন ও সময় উল্লেখ করতে হবে। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভোটগ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণের কাজ চলবে।

নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮ এর বিধি ৭ অনুযায়ী প্রস্তুতকৃত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীগণের তালিকার ভিত্তিতে বিধি ১০ অনুসারে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ব্যালট পেপার মুদ্রণ করতে হবে এবং ব্যালট পেপারে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নাম, প্রতীক ও ক্রম প্রদর্শনের উপযোগীকরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবেন।

এছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীগণের তালিকা প্রণয়নের পর তার এক কপি রিটার্নিং অফিসারের অফিসের দৃষ্টি আকর্ষণীয় স্থানে টানিয়ে দিতে এবং প্রত্যেক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার নির্বাচনি এজেন্টকে এক কপি প্রদান করার জন্যও রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে।

নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, প্রতীক বরাদ্দের কাজ শেষ হওয়ার সাথে সাথে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তালিকার দুই কপি প্রস্তুত করে বিশেষ বার্তাবাহক মারফত নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পৌঁছানোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীগণের তালিকা পাঠাতে যাতে কোনো বিলম্ব না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তালিকা নির্ভুল হতে হবে। কারণ তালিকায় ভুল তথ্য পরিবেশিত হলে মুদ্রিত ব্যালট পেপারে তার প্রতিফলন ঘটবে, যার পরিণতি মারাত্মক হবে। অতএব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীগণের তালিকা প্রণয়নের সময় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ব্যালট পেপার মুদ্রণের সুবিধার্থে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীগণের তালিকার উপরিভাগে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকার প্রকৃত ভোটার সংখ্যা লিপিবদ্ধ করতে হবে।

দলীয় প্রার্থীরা দলের প্রতীক পাবেন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিধিমালায় সংরক্ষিত প্রতীকের তালিকা থেকে পছন্দমত প্রতীক পাবেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের একাধিক প্রার্থী একই প্রতীক পছন্দ করলে আলোচনার মাধ্যমে না হলে লটারি করে বিষয়টি নিষ্পত্তি করবেন।

ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানিয়েছেন, ৩০০ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল হয়েছিল দুই হাজার ৭১৬টি। এর মধ্যে বাছাইয়ের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তারা বাতিল করেছেন ৭৩১টি, আর বৈধ হয়েছে এক হাজার ৯৮৫টি মনোনয়নপত্র।

আগামী ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রার্থীরা রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। আর ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর আপিল নিষ্পত্তি করবে নির্বাচন কমিশন। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনি প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি (রবিবার)।

সূত্রঃ বিডি24লাইভ