বাগমারায় তিনফসলি কৃষিজমি ও ভিটা জমিতে জোরপূর্বক পুকুরখননে বাধা দেওয়ায় ১০ জন কৃষককে কুপিয়ে আহত করা হয়েছেন। আহতদের মধ্যে কালুপাড়া গ্রামের সাইদুর রহমান, বাবলু রহমান, জাহিদ ও ভুট্রু রহমানকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, হামিরকুৎসা ইউনিয়নের কালুপাড়া গ্রামের মৃত তাসের আলীর ছেলে জেহের আলী, নুর আলীর ছেলে সাইনুর রহমান, মোহাম্মদ আলীর ছেলে আরিফ হোসেন ও জোনাব আলীর ছেলে সুমন হোসেনসহ এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যাক্তি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে যশোর বিলে জমিতে চাষ করা সরিষা, টমেটো, বেগুন, মরিচ, লাউ, পেঁয়াজ, গম ও ভুট্রা ক্ষেত নষ্ট করে কৃষকদের তিনফসলি আবাদি জমি ও ভিটা জমি দখল করে নিয়ে সোমবার রাতে ড্রেজার (ভেকু) দিয়ে মাটি কেটে জোরপূর্বক পুকুরখনন কাজ শুরু করেন।
এ সময় স্থানীয় কৃষকদের পক্ষে ৯৯৯ কল দেওয়া হলে তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই বিলের তিনফসলি জমিতে পুকুরখনন কাজ বন্ধ করে দেন।
কিন্তু পুলিশ চলে যাওয়ার পর তারা আবারো পুরোদমে পুকুর খনন কাজ শুরু করেন এবং পাকাসড়ক নষ্ট করে ট্র্রাক্টরযোগে কৃষি জমির মাটি বিভিন্ন ইটভাটায় সরবরাহ করেন।
কৃষকদের অভিযোগ যশোর বিলে পুকুরখনন করা হলে ওই বিলে প্রায় চারশো বিঘা জমিতে চাষাবাদ বন্ধ হয়ে যাবে এবং বিল সংলগ্ন কয়েকটি গ্রামের গরীব ও অসহায় কৃষক পরিবারের মাঝে খাদ্য সংকট দেখা দিবে। এ অবস্থায় যশোর বিলে তিনফসলি কৃষি জমি ও ভিটা জমি রক্ষায় অবৈধভাবে পুকুর খনন বন্ধের দাবিতে মঙ্গলবার বিকেলে এলাকার ভুক্তভোগী কৃষকদের পক্ষে কালুপাড়া গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে বাচ্চু, শামসুল ইসলামের ছেলে সাদ্দাম হোসেন ও বল্টুর ছেলে জাহিদ হোসেন যৌথভাবে বাদি হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি কমিশনারের (ভূমি) কাছে পৃথকভাবে দুটি লিখিত অভিযোগ দেন। ওই অভিযোগের কপিতে এলাকার আরো প্রায় শতাধিক ভুক্তভোগী কৃষক স্বাক্ষর করেছেন। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হলেও অবৈধ পুকুর খনন বন্ধ হয়নি। এ কারণে এলাকার ভুক্তভোগী কৃষকরা মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে তাদের জমিতে পুকুর খনন বন্ধ করার জন্য বাঁধা দিতে গেলে প্রভাবশালী জেহের আলী, সাইনুর রহমান, আরিফ হোসেন ও সুমন হোসেনের নেতৃত্বে তাদের ভাড়া করা সন্ত্রাসীরা কৃষকদের উপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বলেন, আমি আজই বাগমারায় যোগদান করেছি। ঘটনাটি জানার পর কৃষকদের উপর হামলাকারি ও কৃষিজমিতে পুকুর খননকারীদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ওসিকে নির্দেশ দিয়েছি।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, ঘটনার সংবাদ পাওয়া মাত্র তাৎক্ষনিকভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করা হয়েছে। এই ঘটনায় মামলা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এফআর/অননিউজ