বাগমারার তোকিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে জালিয়াতি করে বিদ্যালয়ে ২০ বছর আগে নিয়োগ প্রাপ্ত রাহেমা বিবিসহ সম্প্রতি নিয়োগ পাওয়া তিনজন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর নাম পালটিয়ে অন্যদের নামে নিয়োগপত্র দেওয়া এবং গোপনে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করে অনিয়ম, দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় দুর্নীতিবাজ ওই প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। রোববার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম এক অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে শোকজ করে নোটিশ দিয়েছেন। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে ওই শোকজ নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি তোকিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন তার আতœীয়-স্বজনদের নিয়ে গোপনে বিদ্যালয় পরিচালনার নামে একটি পকেট কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটির সভাপতি করা হয় প্রধান শিক্ষকের ঘনিষ্ঠ আতœীয় আব্দুল আজিজকে। এরপর প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি মিলে নিয়োগ বানিজ্য শুরু করেন। সম্প্রতি ১৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিরাপত্তাকর্মী পদে আব্দুল হালিমকে এবং নগদ ৩ লক্ষ টাকা ও নয় শতক জমি লিখি নিয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে সোহেল রানাকে নিয়োগ দেন। এছাড়া প্রধান শিক্ষকের ভগ্নিপতি জাকারিয়া ও সভাপতির পুত্রবধূ আশা খাতুনকে গোপনে আয়া পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এছাড়া প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি যোগসাজশ করে ২০০৪ সালে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পদে নিয়োগ পাওয়া রাহেমা বিবির নিয়োগ বাতিল করে দেন। এছাড়া সম্প্রতি নিরাপত্তাকর্মী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে নিয়োগ পাওয়া আব্দুল হালিম ও সোহেল রানার নাম পালটিয়ে অর্ধকোটি টাকার বিনিময়ে নাইমুর ইসলাম ও নাজিম উদ্দিনের নামে নিয়োগপত্র দেওয়া হয় বলে ভূক্তভোগীরা অভিযোগে দাবি করেন। এসব অভিযোগের কারণে ভূক্তভোগীরা রাহেলা বিবির এক লিখিত অভিযোগে প্রেক্ষিতে ওই প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
এদিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন, কয়েক মাস আগে সাবেক সংসদ সদস্য (গ্রেফতারকৃত) আবুল কালাম আজাদ ও আউচপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সরদার জান মোহাম্মদসহ স্থানীয় কিছু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের চাপের কারণে রাহেলা বিবিসহ তিনজন কর্মচারীর নাম পালটিয়ে অন্যদের নামে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে।