বাগমারায় নৌকার প্রার্থী কালামের বিরুদ্ধে ইসির মামলা

আবু বাককার সুজন, বাগমারা, রাজশাহী।।

নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘনের কারণে রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে মামলা কারেছে নির্বাচন কমিশন।

বৃহস্পতিবার রাতে ইসির পক্ষ থেকে মামলাটি করা হয়েছে। শুক্রবার তথ্যটি নিশ্চিত করেছে ইসি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই বেপরোয়া হয়ে উঠেন আবুল কালাম আজাদ। প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী কাঁচি প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক এমপি এবং তাঁর কর্মী সমর্থকের ওপর হামলা, মারপিট, নির্যাতন, নির্বাচনী অফিস ভাংচুর, আগুণ দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া, পোস্টার ছিড়ে ফেলা, পোস্টার লাগাতে বাধা দেওয়া ও হুকমী ধমকী সহ বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট একাধিক অভিযোগ পড়ে। সেই অভিযোগের তদন্ত শেষে আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনে সুপারিশ করা হয়েছিল। গত সোমবার নির্বাচন কমিশনের সচিবের কাছে বাগমারা আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কর্মকর্তা রুবিনা পারভীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও কমিশনের সচিবের কাছে আলাদা দুটি প্রতিবেদনে সুপারিশ করেছিলেন।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল, নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ বিভিন্ন সময়ে অপর প্রতিদ্ব›দ্বী কাঁচি প্রতীকের প্রার্থী তিনবারের সংসদ সদস্য এনামুল হককে প্রাণনাশের হুমকি, অশ্লীল ভাষায় আক্রমণাত্মক বক্তব্য প্রদান করেছেন। গত ১২ ডিসেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া দেড় মিনিটের একটি ভিডিওতে আবুল কালাম আজাদকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার সাথে যারা ভাল ব্যবহার করবে, তাদের কাছে আমি ফেরেশতা। যারা খারাপ করবে তারা পৃথিবী থেকে নাই হয়ে যাবে। একটা কথা বললাম। আজাহার-মাজাহার (এনামুলের সমর্থক) এলাকায় থাকবে না’।

কালাম অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে আরো বলেন, ‘নৌকার বাইরে কথা বললে আজাহারের চেহারা চেঞ্জ হয়ে যাবে। নৌকার বাইরে কোনো মাস্তানি চলবে না। এনামুলের মতো লোককে ভুলি দিয়ে নৌকা নিয়ে আসিছি’।

এছাড়া এনামুল হকের সমর্থক গোবিন্দপাড়া ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহেব আলীকে গত ১৪ ডিসেম্বর রুহিয়া মামুদপুর মোড়ে মারধর করেন। এ ঘটনায় বাগমারা থানায় মামলা হয়। যা নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির তদন্তেও ধরা পড়েছে।

এদিকে, এসব অভিযোগ পাওয়ার পর নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি আবুল কালাম আজাদের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা তলব করেন। ব্যাখ্যায় বেশিরভাগ অভিযোগের কথা অস্বীকার করেন তিনি। তবে আচরণবিধি ভঙ্গ হয়ে থাকলে তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন কালাম। তখন তাকে সতর্ক করা হয়। কিন্তু এরপরও বার বার একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। অনুসন্ধান কমিটির তদন্তে ধরা পড়েছে, কালামের উস্কানিমূলক বক্তব্য বা বিবৃতি এবং উচ্ছৃংখল আচরণ সাধারণ ভোটারদের মাঝে ভীতির সঞ্চার করেছে যা সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অন্তরায়। তাই আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে অবশেষে ইসির পক্ষ থেকে নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

এফআর/অননিউজ

আরো দেখুনঃ