বাগমারার তোকিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন ও সভাপতি আব্দুল আজিজ জালিয়াতি করে বিদ্যালয়ে ২০ বছর আগে নিয়োগ প্রাপ্ত রাহেমা বিবিসহ সম্প্রতি নিয়োগ পাওয়া তিনজন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর নাম পাল্টিয়ে অর্ধকোটি টাকা ডোনেশনের বিনিময়ে অন্যদের নামে নিয়োগপত্র দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে গোপনে ম্যানেজিং কমিটি গঠনসহ বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।
এ ঘটনায় দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবিতে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী রাহেমা বিবি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে পৃথকভাবে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের কপি জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরেও দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি তোকিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন তার আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে গোপনে বিদ্যালয় পরিচালনার নামে একটি পকেট কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটির সভাপতি করা হয় প্রধান শিক্ষকের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় আব্দুল আজিজকে। এরপর প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি মিলে নিয়োগ বানিজ্য শুরু করেন। সম্প্রতি ১৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিরাপত্তাকর্মী পদে আব্দুল হালিমকে এবং নগদ ৩ লক্ষ টাকা ও নয় শতক জমি লিখি নিয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে সোহেল রানাকে নিয়োগ দেন। এ ছাড়া প্রধান শিক্ষকের ভগ্নিপতি জাকারিয়া ও সভাপতির পুত্রবধূ আশা খাতুনকে গোপনে আয়া পদে নিয়োগ দেওয়া হয় বলে প্রতিবাদ জানিয়ে দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির অপসারণের দাবিতে কয়েক দিন আগে এলাকার লোকজন মানববন্ধন করেন। এরপর প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি যোগসাজশ করে ২০০৪ সালে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পদে নিয়োগ পাওয়া রাহেমা বিবির নিয়োগ বাতিল করে দেন। এছাড়া সম্প্রতি নিরাপত্তাকর্মী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে নিয়োগ পাওয়া আব্দুল হালিম ও সোহেল রানার নাম পাল্টিয়ে অর্ধকোটি টাকা ডোনেশনের বিনিময়ে নাইমুর ইসলাম ও নাজিম উদ্দিনের নামে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে বলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ভূক্তভোগীরা।
এদিকে রাজনৈতিক চাপের কারণে অনেক সময় কিছু হেরফের করেই তাদের টিকে থাকতে হয় বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন।
অপরদিকে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল আজিজ বলেছেন, প্রথমে আব্দুল হালিম ও সোহেল রানাকে নিয়োগ বোর্ড গঠন করে বৈধভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তবে রাজনৈতিক চাপের কারণে পরবর্তীতে তাদের নাম পাল্টিয়ে নাইমুর ইসলাম ও নাজিম উদ্দিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেছেন।
এদিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুক্তাদির আহম্মেদ এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে জানিয়েছেন।
এফআর/অননিউজ