বাগমারা (রাজশাহী) প্রতিনিধি।।
প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বাগমারার দামনাশ বাজারের এক বহিরাগত ফিড ব্যবসায়ী বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে অ্যাসিড ছুড়ে মেরে ১০ম শ্রেণীর এক ছাত্রীর মুখমন্ডল ঝলসে দেওয়ার হুমির দিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এই ঘটনায় ওই ছাত্রীর নিরাপত্তা ও প্রতিকার চেয়ে তার বাবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করে ওই বখাটে ব্যবসায়ীকে গ্রেফতারের জন্য থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
জানা গেছে, গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের দামনাশ পারদামনাশ উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণীর এক মেধী ছাত্রীকে স্কুলে আসা-যাওয়ার সময় দামনাশ বাজারের নারিশ পোল্ট্রি ফিড ডিলার বেলাল হোসেন প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে প্রায়ই উত্যাক্ত করে আসছিল। বেলাল হোসেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে। সে ব্যবসা করার নামে দামনাশ বাজারে এসে প্রায় ছয় মাস ধরে ওই ছাত্রীকে অপহরণের এবং অ্যাসিড ছুড়ে মেরে মুখমন্ডল ঝলসে দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে উত্যাক্ত করে আসছিল। এতে ওই ছাত্রীর লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। এইসব ঘটনায় এর আগেও থানায় জিডি করাসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে ওই বখাটে ব্যবসায়ী বেলাল হোনেকে দুই মাসের মধ্যে অন্যত্র বিয়ে করতে হবে, দিনের বেলায় দোকানে আসতে পারবে না এবং ওই ছাত্রীর চোখের আড়ালে থাকতে হবে মর্মে মুসলেকা দিয়ে সে রক্ষা পায়। এরপর ওই ছাত্রী আবার স্কুলে আসা-যাওয়া শুরু করে। কিন্তু মাত্র একমাস যেতে না যেতেই বুধবার সকালে দামনাশ কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নানের লিচু বাগানের পাশ দিয়ে স্কুলে যাওয়ার সময় বখাটে ফিড ব্যবসায়ী বেলাল হোসেন ওই ছাত্রীর দুই হাত চেপে ধরে বোতল থেকে অ্যাসিড ছুড়ে মারার চেষ্টা করে। এ সময় ওই ছাত্রীর চিৎকারে গোবিন্দপাড়া ইউপির সাবেক সদস্য মকলেছুর রহমান ও স্থানীয় বাসিন্দা মাসুদ রানাসহ আশে-পাশের লোকজন এগিয়ে এলে অ্যাসিডের আক্রমন থেকে ওই ছাত্রী রক্ষা পায়। এ সময় ওই বখাটে বেলাল হোসেন পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা নিলুফা ইসাসমিন বলেন, ওই ছাত্রী অত্যন্ত মেধাবি। সে বিজ্ঞান বিভাগে ছাত্রী। তার রোল নম্বর ১। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই সে আর স্কুলে আসছে না।
এদিকে ভূক্তভোগী ওই ছাত্রীর বাবা জানান, নিরাপত্তার অভাবে মেয়েকে এখন আর স্কুলে পাঠাতে পারছেন না। প্রশাসন যদি তার মেয়ের নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করে এবং ওই বখাটের বিরুদ্ধে যদি কোনো ব্যবস্থা না নেয় তাহলে তার মেয়ের লেখাপড়া হয়তো এখান থেকে শেষ হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে থানার ওসি অরবিন্দ সরকার বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং ওই বখাটেকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এ জন্য হাটগাঙ্গোপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।