রাজশাহীর বাগমারায় সন্ত্রাসী হামলায় আহত বন্ধুকে দেখতে এসে সোহাগ হোসেন খুনের ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। নিহত সোহাগ হোসেনের চাচাতো ভাই বাদী হয়ে রোববার রাতে মামলাটি করেন। এতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। থানার ওসি অরবিন্দ সরকার সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত সোহাগ হোসেনের (২৪) বাড়ি যশোরের মনিরামপুর উপজেলার আরশিংগাড়ী গ্রামে। তার বাবার নাম শরিফ উদ্দিন মিস্ত্রী। যশোর থেকে সোহাগ হোসেন কেন বাগমারায় এসেছিলেন, সেই বিসয়ে পুলিশ অনুসন্ধান চালাচ্ছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরবিন্দ সরকার বলেন, ওই যুবক সহযোগীদের নিয়ে ওই রাতে কেন বাগমারায় এসেছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিহত যুবকের বিরুদ্ধে কোনো থানায় মামলা বা অভিযোগ নেই বলেও ওসি জানান।
গত শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে ঝিকরা ইউনিয়নের মরুগ্রাম ডাঙ্গাপাড়ায় কয়েকজন সন্ত্রাসী সোহাগ আলীকে কুপিয়ে হত্যা করে। ওই গ্রামের আনিছুর রহমানের ছেলে মোনাহার ইসলাম ও নজরুল ইসলাম সঙ্গে আসাদুল ইসলাম, সাজ্জাদ হোসেন, রহিদুল ইসলাম, রনি হোসেন ও মসলেম আলীসহ কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে গ্রামের একটি পুকুর ইজারা নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়। ওই বিরোধের জের ধরে শুক্রবার সকালে আসাদুল ইসলাম ও রহিদুলের নেতৃত্বে এলাকার কয়েকজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী আনিছুর রহমানের ছেলে মোনাহার ইসলামকে পিটিয়ে আহত করে। তাকে নওগাঁর আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এই খবর পেয়ে মোনাহার হোসেনের বন্ধু সোহাগ হোসেন কয়েকজন সহযোগীসহ ঢাকা থেকে আত্রাই হাসপাতালে আসেন আহত মোনাহার হোসেনকে দেখতে। সেখান থেকে রাতে সিএনজিযোগে তিনি তার সহযোগীদের নিয়ে বাগমারায় মোনাহারের বাড়িতে আসেন। কিন্তু গ্রামে বহিরাগত সন্ত্রাসী প্রবেশ করেছে বলে প্রচার করে আসাদুল ইসলাম, সাজ্জাদ হোসেন, রহিদুল ইসলাম, রনি হোসেন ও মসলেম আলীসহ আরো কয়েকজন ব্যক্তি তাদের ঘিরে ধরে এবং এক পর্যায়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা সোহাগ আলীকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে নিহত সোহাগ হোসেনের লাশ উদ্ধার করে। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ দুইজন সিএনজিচালকসহ তিনজনকে আটক করে থানা হেফাজতে নেয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুই সিএনজিচালককে ছেড়ে দেওয়া হয়। আটক আরেকজনকে অন্য একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কে এইচ এম এরশাদ আলী বলেন, নিহত যুবক দুই বছর থেকে ঢাকায় একটি কোম্পানিতে চাকতি করতেন। ওই কোম্পানিতে মোনাহার হোসেনও চাকরি করতে। সেই সূত্র ধরে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সর্ম্পক গড়ে উঠায় সন্ত্রাসী হামলায় আহত বন্ধুকে দেখতে এসে তিনি খুনের শিকার হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ মিলেছে।
এফআর/অননিউজ