বাগমারায় বিলে জোরপূর্বক মাছচাষে বাধা দেওয়ায় দখলদারদের হামলায় ১৫ জন কৃষক আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে জোনাব আলী, বাবুল হোসেন, বেলাল হোসেন, আজাদ আলী, শাকিম হোসেন, দুলাল উদ্দিন, হাসান আলী, দলিল উদ্দিন, আবেদ আলী ও জোনাব আলী সুদালকে আশংকাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় এলাকায় এখন চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। খবর পেয়ে বাগমারা থানা ও হাটগাঙ্গোপাড়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, নরদাশ ইউনিয়নের হাতিয়ার বিলের কৃষকদের উচ্ছেদ করে দিয়ে আব্দুল মতিন ও তমেজ উদ্দিনসহ এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে প্রায় ১৪ বছর ধরে বিলটি দখল করে নিয়ে জোরপূর্বক মাছচাষ করে আসছে। নরদাশ গ্রামের মজিবর রহমান নামে এক কৃষক জানান, হাতিয়ার বিল মৎস্য চাষ প্রকল্প নাম দিয়ে প্রভাবশালীরা জমি মালিকদের ঠকিয়ে এক যুগ ধরে সেখানে মাছ চাষ করে আসছে। ওই প্রকল্পের সভাপতি তমেজ উদ্দিন এবং সাধারন সম্পাদক আব্দুল মতিন বিল দখলের জন্য একটি লাঠিয়াল বাহিনী গঠন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কৃষকরা বাধা দিলে ওই লাঠিয়ালবাহিনীর লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাদের ভয়ভীতি দেখায়। এর আগে ওই বাহিনীর আক্রমনের শিকার হয়ে নরদাশ গ্রামের মোবারক হোসেন ও রফিক উদ্দিনসহ অনেকেই আজীবনের মতো পঙ্গু হয়ে গেছেন।
এর প্রতিকার চেয়ে এবং প্রভাবশালীদের কবল থেকে বিলটি উদ্ধারের দাবিতে এলাকার পাঁচ শতাধিক ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক সম্প্রতি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এর প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে বিষয়টি মিমাংসার প্রত্রিয়া চলছে। এরপরও বুধবার দখলদারদের পক্ষ থেকে ওই বিলে জোরপূর্বক মাছের পোনা ছাড়তে গেলে কৃষকরা বাধা দেন। এ সময় আব্দুল মতিন ও তমেজ উদ্দিনের নেতৃত্বে তাদের ভাড়াটিয়া লাঠিয়ালবাহিনীর লোকজন ধারালো অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠিশোটা নিয়ে কৃষকদের উপর হামলা চালায়। এতে অন্তত ১৫ জন কৃষক আহত হন।
বাগমারা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে বিল সংলগ্ন এলাকায় পুলিশী টহল জোরদার করা হয়েছে জানিয়েছেন।