বাগমারা, রাজশাহী প্রতিনিধি।।
বাগমারার গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মফিজ উদ্দিন ক্ষমতার জোরে অবৈধভাবে কদমতলা ব্রিজের মুখে বাঁধ দিয়ে পানিচলাচল বন্ধ করে দিয়ে রমজানপাড়া বিলে মাছচাষ শুরু করেছেন। এতে কৃত্রিম জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ওই বিলের প্রায় দুইশ বিঘা জমিতে চাষাবাদ ও বাড়িঘর এখন হুমকির মুখে পড়েছে। এ কারণে ওই ব্রিজের মুখের সামনে থেকে অবৈধ বাঁধটি অপসারণের দাবিতে মঙ্গলবার বিকেলে মানববন্ধন করেছেন এলাকার কৃষকরা ও মৎস্যজীবীরা। রমজানপাড়া কদমতলা ব্রিজ সংলগ্ন সড়কের দুইপাশে দাঁড়িয়ে এই মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেন রমজানপাড়া, মাদিলা ও মনোপাড়াসহ ৫-৬ টি গ্রামের কৃষক ও মৎস্যজীবী পরিবারের শতশত নারী-পুরুষ।
জানা গেছে, গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের রমজানপাড়া বিল সংলগ্ন মাদিলা, মনোপাড়া, রমজানপাড়া ও বোয়ালিয়াসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামে প্রায় শতাধিক মৎস্যজীবী পরিবার রয়েছেন। আজীবন ধরে তারা ওই বিলে স্বাধীনভাবে মাছ ধরে জীবীকা নির্বাহ করে আসছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি গোবিন্দাপাড়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মফিজ উদ্দিন ও আহম্মদ আলীর নেতৃত্বে এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে গরীব ও অসহায় মৎস্যজীবীদের ওই বিল থেকে উচ্ছেদ করে দিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন। শুধু তাই নয় মাছ চাষের সুবিধার জন্য প্রভাবশালীরা ওই বিলের পানি নামার এক মাত্র মাধ্যম কদমতলা ব্রিজের মুখের সামনে মাটি ফেলে বাঁধ দিয়ে পানি চলাচল ও প্রাকৃতিক মাছ প্রবেশের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। প্রভাবশালীদের হুমকি-ধামকির কারণে ওই বিলে আগের মত এখন আর মাছ ধরতে না পারায় বিল সংলগ্ন এলাকার গরীব ও অসহায় মৎস্যজীবী পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এছাড়া জলাবদ্ধতার কারণে ওই বিলের সমস্ত জমিতে চাষবাদ অনিশ্চিত হওয়ায় এলাকার কৃষক পরিবারও খাদ্য সংকটে পড়ার আশংকা করছেন। এ ঘটনায় রোববার এলাকার ৬৩ জন কৃষক ও মৎস্যজীবীদের স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং কৃষি কর্মকর্তার কাছে দেওয়া হলেও এখন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই পরিস্থিতিতে প্রভাবশালীদের দেওয়া অবৈধ বাঁধটি অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন শেষে কদমতলা মোড়ে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন কৃষক রমাজন আলী, আশাব আলী, আবু তালেব, অনিল কুমার হালদার, আমিনুল ইসলাম, মৎস্যজীবী গনেশ হালদার, আফজাল হোসেন ও আক্কাছ আলী।
এ বিষয়ে বাগমারার দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউএনও (সহকারি কমিশনার ভূমি) সুমন চৌধুরী বলেন, এলাকার কৃষক ও মৎস্যজীবীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং যারা ব্রিজের মুখে বাঁধ দিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করেছে তাদেরকে দুই-এক দিনের মধ্যেই বাঁধটি অপসারণ করে নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এফআর/অননিউজ