বাগমারার দ্বীপপুর ইউনিয়নের মীরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের মেহগিনি গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দুটি পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
একটি অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মীরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তারের নির্দেশে পূর্ব দৌলতপুর গ্রামের সামসুল হক, রবিন, টুকু, ইউপি সদস্য সাম ও এচাহাক আলী স্কুলের গাছ দুটি কেটেছেন বলে নানসর গ্রামের মোফাজ্জল হোসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ওই অভিযোগের বরাদ দিয়ে বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইনে প্রধান শিক্ষকের নাম জড়িয়ে একটি সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে।
অপরদিকে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার দাবি করেছেন, পূর্ব দৌলতপুর গ্রামের গ্রাম প্রধান হাবিবুর রহমান, টুকু ও এচাহাক আলীসহ কয়েকজন ব্যক্তি তার অনুপস্থিতির সুযোগে প্রায় ৩০ হাজার টাকা মূল্যের স্কুলের একটি মেহগিনি গাছ ও দুটি গাছের ডালপালা কেটে ফেলে। এই ঘটনায় ওই দিনই তিনি বাদী হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এবং বাগমারা থানায় পৃথকভাবে দুটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।
গতকাল সরজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মীরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ছায়া ও শোভা বর্ধনের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রায় ১৫ বছর আগে স্কুলের সীমানার মধ্যে কিছু মেহগিনি ও ফলজ আম গাছের চারা রোপন করেছিলেন। গাছগুলো সবে মাত্র বড় হয়ে উঠছিল। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতির সুযোগে এলাকার প্রভাবশালী হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে পূর্ব দৌলতপুর গ্রামের গ্রাম প্রধান টুকু ও এচাহাক আলীসহ কয়েকজন ব্যক্তি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে দা, কুঠাল ও করাত দিয়ে একটি মেহগিনি গাছ ও দুটি গাছের ডালপালা কেটে সাবাড় করেন। এ সময় প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার স্কুলের কাজে উপজেলা সদর ভবানীগঞ্জে ছিলেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে তিনি দ্রুত স্কুলে এসে একটি কাটা গাছ ও দুটি গাছের কাটা ডালপালা পড়ে থাকতে দেখেন।
এদিকে বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আনোয়ার হোসেন এবং দ্বীপপুর ইউপির বর্তমান সদস্য আব্দুল আলিম ও সাবেক ইউপি সদস্য রুস্তম আলী জানান, পূর্ব দৌলতপুর গ্রামের প্রভাবশালী হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে একই গ্রামের গ্রাম প্রধান টুকু ও এচাহাক আলীসহ কয়েকজন ব্যক্তি স্কুলে ছায়া ও শোভা বর্ধন করা একটি মেহগিনি গাছ ও দুটি গাছের ডালপালা কেটে নিয়ে যাওয়া চেষ্টা করেন। এ সময় বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও স্থানীয় লোকজন বাঁধা দিলে কর্তন করা গাছ ও কাটা গাছের ডালপালা ফেলে রেখে তারা চলে যায়। ইট ভাটায় জ্বালানী হিসাবে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে তারা গাছগুলো কাটতে এসেছিল বলে স্থানীয় লোকজন এই প্রতিবেদককে জানান।
এ প্রসঙ্গে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং কাটা গাছ জব্দ করে দ্বীপপুর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানের হেফাজতে রাখা হয়েছে।
এফআর/অননিউজ