কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানা এলাকায় মধ্যরাতে জোরপূর্বক ঘরে প্রবেশ করে নারীকে ধর্ষন, ডাকাতির ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করার ঘটনায় ধৃত তিন লম্পট ডাকাতকে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে গাজীপুর গ্রামের শিশু মিয়ার ছেলে সজিব মিয়া (২৩), ফুল মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন (৩৭) ও মৃত জীবন মিয়ার ছেলে নাজমুল হাসান টুকুনকে (১৯) গ্রেফতার করে। এ সময় পুলিশ তাদের কাছ থেকে লুন্ঠিত মোবাইল ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দা এবং ছুরি উদ্ধার করেছে।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক দেড়টায় থানার রাজা চাপিতলা গ্রামের এক বাড়িতে জোরপূর্বক প্রবেশ করে প্রথমে ধর্ষন, পরে নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারন এবং ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ১৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার শুধু চুরির মামলা রেকর্ড করে। পরদিন ১৭ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই ওমর ওমর ফারুক ভিকটিমের বাবার কাছ থেকে গাড়ীর তেল খরচ বাবদ পনের’শ টাকা আদায় করে। পুলিশের সাথে সখ্যতা গড়ে ওই নারী ও তার পিতাকে আসামীপক্ষ মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দেয়।
ভিকটিমের পিতার অভিযোগ, ঘটনার পরদিন গত ১৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করতে গেলেও প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে সাধারণ চুরির অভিযোগ নিয়ে সময় ক্ষেপনের মাধ্যমে ঘটনার প্রধান আসামী টনকী গ্রামের আনু মিয়ার ছেলে জাকির হোসেনকে পালিয়ে যেতে সহায়তার অভিযোগ উঠে এসআই ওমর ফারুকসহ ৩ পুলিশের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর পুলিশ প্রশাসনের টনক নড়ে। জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে মুরাদনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিযুষ চন্দ্র দাস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পান। চুরির মামলার পরিবর্তে ধর্ষণ পর্নোগ্রাফী নিয়ন্ত্রণ ও ডাকাতির মামলা রুজু করার নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় জেলা পুলিশ প্রশাসন কর্তব্য কাজে অবহেলার দায়ে এসআই ওমর ফারুক, এএসআই আতাউর রহমান ও কন্সটেবল মামুন মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করলেও অধরাই রয়ে যায় ঘটনার সাথে জড়িতরা।
বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি ইকবাল হোসেন বলেন, ঘটনার সাথে জড়িত ৩ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।