বিএনপি রাজনৈতিকভাবে কখনোই তত্ত্বাবধায়ক সরকারে বিশ্বাস করে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র, সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু এমপি। তিনি বলেন, বিএনপি মুখে বলে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই, এটা তাদের মিথ্যাচার। তারা নিজেরাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিশ্বাস করে না। কারণ এরশাদের পতনের আগে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এক সঙ্গে আন্দোলন করেছিল। তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় এসে তাদের কথা রাখলেন না। তারা ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল।
শনিবার দুপুরে ঝালকাঠিতে আওয়ামী লীগের নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। স্থানীয় শিল্পিকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা আওয়ামী লীগ এ অনুষ্ঠানে আয়োজন করে।
স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি দেশের বিরুদ্ধে এখনো ষড়যন্ত্র করছে দাবি করে আওয়ামী লীগের বর্ষিয়ান নেতা আমির হোসেন আমু বলেন, দেশের উন্নয়ন দেখে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে। তারা চাইছে এ দেশ পাকিস্তানের রূপরেখায় চলুক। এই অপশক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দায়িত্ব হচ্ছে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালি করা । সংগঠনের শক্তি বৃদ্ধির মাধ্যমে দলকে সুসংগঠিত করতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে। তাই দলীয় নেতাকর্মীদের সজাগ থাকতে হবে, আওয়ামী লীগ তাদের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেই আবারো ক্ষমতায় আসবে।
জনগণ বিএনপির পাশে নেই জানিয়ে সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, বিএনপি বুঝতে পেরেছে জনগণ তাদের পাশে নেই। কারণ তারা আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা করেছে, পুড়িয়ে মেরেছে। তাদের হাতে ক্ষমতা যাক এটা বাংলার মানুষ চায় না। তাই বিএনপি আগামী সংসদ নির্বাচন বাঞ্চাল করার নতুন চক্রান্ত করছে।
বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল দাবি করে আমির হোসেন আমু বলেন, বর্তমান শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশে কোন খাদ্য ঘাটতি নেই। কেথাও কোন অভাব নেই। মানুষ খেয়ে পড়ে শান্তিতে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছেন, শিক্ষার আলো জ্বালিয়েছেন। গ্রামে গ্রামে রাস্তা-ঘাট, সেতু-কালভার্ট করে দিয়েছেন। বিভিন্ন ভাতা দিয়ে মানুষকে সহায়তা করে যাচ্ছেন। উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে হলে আবারো নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান আমির হোসেন আমু।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যডভোকেট আফজাল হোসেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা আনিচুর রহমান ও গোলাম রব্বানী চিনু।
ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার মো. শাহ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খান সাইফুল্লাহ পনির।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, বাংলদেশের উন্নয়ন দেখে ঈর্ষন্বিত হয়ে একটি গোষ্ঠী নতুন করে ষড়যন্ত্রে নেমেছে। তারা বলেছিল, পদ্মাসেতু নির্মাণ করতে পারবে না শেখ হাসিনা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু করে দেখিয়েছেন, এটা আমাদের গৌরব। মনে রাখতে হবে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি যদি কোনভাবে ক্ষমতায় আসে, তাহলে আবারো লুটপাট, হামলা, নারী ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হবে। সুযোগ পেলে তারা বাংলাদেশকে গিলে খেয়ে ফেলবে। ওরা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধ্বংস করে দিবে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যডভোকেট আফজাল হোসেন বলেন, আমরা সংগঠনকে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী করতে চাই। একটি সংগঠনের সভা, সমাবেশ, মিছিল যেমন জরুরি, তেমনিভাবে একটি সংগঠনের শ্রীবৃদ্ধি ও সুশৃঙ্খল করাও জরুরি। তাই সবাইকে সদস্য নবায়ন করতে হবে। ঘরে ঘরে গিয়ে নতুন সদস্য সংগ্রহ করারও আহ্বান জানান তিনি।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য গোলাম রব্বানী চিনু বলেন, বাংলাদেশকে যারা শ্রীলংকা বানাতে চান, তাদের স্বপ্ন পূরণ হবে না। বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে এখন রোল মডেল। বিশ্বের বড় বড় নেতারা এখন জানতে চান, শেষ হাসিনা কিভাবে বাংলাদেশকে এতো সমৃদ্ধশালী করেছেন।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সদস্য পদ নবায়ন কার্যক্রম শুরু করেন। এছাড়াও নতুনদের সদস্য ফরম পূরণ করিয়ে দলের সদস্য করেন।