উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে না পারায় বন্ধের পথে রপ্তানিতে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান আকিজ জুট মিল। দেশের বাজারে পাটের সংকট, দাম বেশি এবং বহির্বিশ্বে উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা না থাকায় উৎপাদন সীমিত করা হয়েছে জুট মিলটিতে।
যশোরের নওয়াপাড়া শিল্প বন্দরে অবস্থিত জুট মিলটির প্রায় সাড়ে ৬ হাজার শ্রমিককে কাজে আসতে নিষেধ করা হয়েছে গত কয়েক দিনে। তিন শিফট থেকে কমিয়ে আনা হয়েছে দুই শিফটে। শনিবার থেকে এক শিফটে কাজ করা হবে বলে গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে।
সর্বশেষ গত মঙ্গলবার থেকে শ্রমিকদের যাতায়াতে ব্যবহৃত কয়েকটি বাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন আকিজ জুট মিলের নির্বাহী পরিচালক শেখ আব্দুল হাকিম।
সূত্র জানায়, নওয়াপাড়া আকিজ জুট মিলের তিন শিফটে প্রায় ৭ হাজার শ্রমিক ও ২ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে। শ্রমিকদের মধ্যে ৬ হাজার ৩শ বদলি শ্রমিক। মঙ্গলবার এসব বদলি শ্রমিকদের আর কাজে না আসতে বলা হয়।
মিলের স্পিনিং বিভাগের ছাঁটাইকৃত কয়েকজন শ্রমিক জানান, হঠাৎ করে মিলের কাজ বন্ধ হওয়ার কারণে বেকার হয়ে পড়েছেন তারা। মিলে পাট নেই বলে অনেকের কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, আকিজ জুট মিলস লিমিটেড পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতস্বরূপ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে স্বর্ণপদক অর্জন করে। গত ৭ এপ্রিল রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) আয়োজিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রপ্তানি ট্রফি (২০১৭-১৮) বিতরণ অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়।
আকিজ জুট মিলের সিবিএ সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, বাজারে গুণগত পাট না পাওয়া এবং পাটের দাম অনেক বেশি হওয়ায় কর্তৃপক্ষ উৎপাদন সীমিত করছে। এ লক্ষ্যে বদলি শ্রমিকদের গত ৮ নভেম্বর থেকে পর্যায়ক্রমে বাদ দেওয়া শ্রমিকদের আপাতত আসতে নিষেধ করেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারও শ্রমিকদের কাজে নেওয়া হবে। বর্তমানে কম শ্রমিক দিয়ে মিল চালু রয়েছে।
নির্বাহী পরিচালক আব্দুল হাকিম বলেন, আকিজ জুট মিলের পণ্য তুরস্কে রপ্তানি করা হয়। উৎপাদিত পণ্য বাইরে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া পাঠাতে গেলে খরচও বেশি হচ্ছে। সেই সঙ্গে নতুন অর্ডারও কমে গেছে। পাশাপাশি দেশের বাজারে গুণগতমানের পাট পাওয়া যাচ্ছে না। যেটা পাওয়া যাচ্ছে তার দামও বেশি। সব মিলিয়ে তিন শিফটে উৎপাদন সচল রাখা সম্ভব হচ্ছে না। লোকসান এড়াতে স্থায়ী শ্রমিকদের দিয়ে এখন দুটি শিফটে কাজ চলছে।